মূর্তি নদী,গরুমারা জাতীয় উদ্যান, জলদাপাড়া অভয়ারণ্য, বক্সা ফোর্টের বাইরেও রয়ে গিয়েছে এক অচেনা ডুয়ার্স যার সন্ধান আমরা অনেকেই পাইনি। তেমনই এক অচিন ডুয়ার্সের ঠিকানা গারুচেরা। বীরপাড়ার কাছেই গারুচেরা বনবস্তি। এখানে সবুজ ঘাসের গালিচার ওপর বসে ব্যস্ত পাখিদের উড়ে বেড়ানো দেখে মন চঞ্চল হয়ে ওঠে। ওয়াচটাওয়ারে বসে ঘন্টার পর ঘন্টা সময় কাটিয়ে দেওয়া যায় অরণ্যের সৌন্দর্য উপভোগ করে। দুপুরটা জঙ্গলে ঘুরে বেড়িয়েই কাটানো যায় অথবা ফরেস্টের ভেতর দিয়ে ১০ কিমি ট্রেকিং করে পৌছে যাওয়া যায় ভূটান পাহাড়ের পাদদেশে। হাতে সময় থাকলে ঘুরে দেখতে পারেন ভূটানের সিমেন্ট কারখানা, বৌদ্ধ মনেস্ট্রি। পৌঁছে যেতে পারেন ভূটানের কোল লাগোয়া শতাব্দী প্রাচীন মাকড়াপাড়া কালীবাড়িতে। এ রকম পরিবেশে কালীবাড়ি – এক দিকে জঙ্গল, পাহাড়, পাথুরে নদী তার মাঝে সহজ সরল সাধাসিধে বিভিন্ন জনজাতি গোষ্ঠীর মানুষ – সব কিছু মিলেমিশে এক অদ্ভুত মোহময় ব্যঞ্জনা! এই পটে আঁকা বন্যছবি উপলব্ধি করতে যেতে হবে গারুচেরা।
যাওয়া – এনজেপি থেকে ট্রেনে নিউ মাল – বানারহাট – দলগাঁও (বীরপাড়া) সহজেই পৌঁছে যাওয়া যায় কিংবা শিলিগুড়ি থেকে সড়ক পথে জাতীয় সড়ক ৩১ সি ধরে সেবকের পাহাড়ি পথের সৌন্দর্য উপভোগ করে ওদলাবাড়ি-মাল-বানারহাট পেরিয়েও পৌঁছে যেতে পারেন বীরপাড়াতে। বীরপাড়া পৌঁছনোর আরও একটি বিকল্প পথ রয়েছে। বানারহাট থেকে কারবালা চা বাগান - রেতি নদী, বান্ধাপানি হয়ে মাঝারি ও ছোট মাপের ৫ টি সাঁকোবিহীন নদীর খাত অতিক্রম করে অতি বন্ধুর পথ পেরিয়ে জয় বীরপাড়া চা বাগানকে ডান হাতে রেখে পৌঁছনো যায় বীরপাড়াতে। বীরপাড়া থেকে দলমোড় চা বাগানের দিকে এগোলে রাস্তাটি দু’ ভাগে বিভক্ত হয়ে একটি সোজা পাগলু ভূটানের দিকে চলে যায় অপরটি বাদিকে গোমটু ভূটানের (১১ কিমি) দিকে যায়। বাঁ দিকের রাস্তা ধরে কিছুটা এগিয়ে লঙ্কাপাড়া চা বাগান ও ফরেস্ট পার হয়ে আবার বাঁ দিকে পথ চলা । পথ বললে ভুল হয় – অরণ্যের মাঝে অসমতল কাঁচা রাস্তা যাও আবার গিয়ে শেষ হয় বেশ চওড়া একটি পাহাড়ি নদীতে যা পারাপার করার জন্য কোনও সাঁকো নেই। শীতকালে নদীতে বিন্দুমাত্র জল থাকে না- শুধুই বালু আর বড় বড় পাথর, একেবারেই শুকনো দেখে বোঝার উপায় নেই বর্ষার সময় এই নদীগুলি কী ভয়ানক রূপ ধারণ করে। নদীখাতে দাঁড়িয়েই উপভোগ করা যায় কাছের ভূটান পাহাড়ের মনোময় শোভা। এবড়োখেবড়ো নদীখাত পেরিয়ে গারুচেরা বনবস্তি। সেখান থেকে ডান দিকে মোড় ঘুরে ২ কিমি কাঁচা রাস্তা পেরিয়ে ছবির চেয়েও সুন্দর এক দিকে ভূটান পাহাড় অপর দিকে শাল-সেগুন প্রধান অরণ্য – বিস্তৃর্ণ ফাঁকা জায়গার মাঝে ছবির মতো কটেজগুলি।
থাকা –এখানে থাকার জন্য বনবিভাগের তিনটি কটেজ আছে।
সুত্রঃ পোর্টাল কন্টেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/20/2020