তারকেশ্বর হুগলি জেলার একটি পৌরশহর। এটি উক্ত জেলার চন্দননগর মহকুমার একটি থানাও বটে। তারকেশ্বর একটি প্রসিদ্ধ হিন্দু তীর্থক্ষেত্র। রাজ্যের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ শিবমন্দিরটি এই শহরেই অবস্থিত। এই শহর রাজ্যের রাজধানী কলকাতার থেকে ৫৮ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত।
সিঙ্গুর থেকে যে রাস্তাটা তারকেশ্বরে গেছে সেই রাস্তায় জুলাই-আগস্ট মাসে বা শিবরাত্রি ও চৈত্র সংক্রান্তির সময় তোমাদের যাওয়ার সুযোগ হয় তা হলে দেখবে দলে দলে আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা চলেছে হেঁটে। কাঁখে বাঁক। সাধারণ থেকে সুদৃশ্য। তাতে রয়েছে জল। তারকেশ্বরে বাবা তারকনাথের মাথায় ঢালার জন্য। সাধারণ মানুষের বিশ্বাস বাবার মাথায় জল ঢাললে মনস্কামনা পূর্ণ হয়। এই সময় বিপুল ভিড় হয় তারকেশ্বরে। শুধু পশ্চিমবঙ্গের নানা প্রান্ত থেকেই নয়, দেশের নানা জায়গা থেকেও পুণ্যার্থীরা আসেন শিবের মাথায় জল ঢালতে।
অনাদি স্বয়ম্ভু দেবতা আদিনাথ বা শিবের মন্দিরকে ঘিরে খ্যাতি তারকেশ্বরের। আবিষ্কার মুকুন্দ ঘোষের, আর স্বপাদিষ্ট হয়ে জঙ্গল কেটে মন্দিরটি তৈরি করান রাজা ভারামল্ল ১৭২৯-এ। রেল স্টেশন থেকে ৫ মিনিটের হাঁটা পথে পৌঁছে যাওয়া যায় মন্দিরে। আজকের আটচালা মন্দিরটি তৈরি করেন শিয়াখালার গোবর্ধন রক্ষিত। স্বয়ম্ভু শিবলিঙ্গ ছাড়াও মন্দিরে রয়েছেন বাসুদেব, দ্বিমতে ব্রহ্মা। শিবরাত্রি ও চৈত্র সংক্রান্তিতে আর শ্রাবণ মাসের প্রতি সোমবারে অসংখ্য ভক্ত সমাগম হয়। মন্দিরের লাগোয়া দুধপুকুর। সংস্কারের পর দুধপুকুর এখন পরিচ্ছন্ন ও সুন্দর। এই পুকুরে স্নান করলে পুণ্য হয় বলে লোকের বিশ্বাস। লাগোয়া রাজবাড়িটিও দর্শনীয়।
হাওড়া থেকে ট্রেনে পৌঁছে যাওয়া যায় তারকেশ্বরে। কলকাতা সহ পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন স্থান থেকেই বাস যাচ্ছে তারকেশ্বর। অনেকে কলকাতায় গঙ্গা থেকে বা বৈদ্যবাটির নিমাইতীর্থ ঘাট থেকে বাঁকে জল নিয়ে হেঁটে তারকেশ্বর পৌঁছন।
তারকেশ্বরে থাকার জন্য রয়েছে পশ্চিমবঙ্গ পর্যটনের তারকেশ্বর ট্যুরিস্ট লজ। দুধপুকুরের পাড়ে তারকেশ্বর মিউনিসিপ্যাল গেস্ট হাউস। এ ছাড়াও বহু বেসরকারি হোটেল ও ধরমশালা আছে।
শিবরাত্রি ও চৈত্রসংক্রান্তিতে তারকেশ্বরে বাবার মন্দিরকে ঘিরে মেলা বসে যায়।
সূত্র: পোর্টাল কনটেন্ট টিম
সর্বশেষ সংশোধন করা : 5/20/2020