আবিষ্কার : ১৯০২ খ্রিস্টাব্দ
বিজ্ঞানী : লিয় ফিলিপ তেসারেন্স দ্য বোরত
পৃথিবীর চারপাশে ঘিরে থাকা বিভিন্ন গ্যাস মিশ্রিত স্তরকে যা পৃথিবী তার মধ্যাকর্ষণ শক্তি দ্বারা ধরে রাখে তাকে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল বা আবহমণ্ডল বলে।এই বায়ুমন্ডল সূর্য থেকে আগত অতিবেগুনি রশ্মি শোষণ করে পৃথিবীতে জীবের অস্তিত্ব রক্ষা করে।এছাড়ও তাপ ধরে রাখার মাধ্যমে (গ্রিনহাউজ প্রতিক্রিয়া) ভূপৃষ্টকে উওপ্ত করে এবং দিনের তুলনায় রাতের তাপমাত্রা হ্রাস করে।
শ্বাস-প্রশ্বাস ও সালোকসংশ্লেষণের জন্য ব্যবহৃত বায়ুমন্ডলীয় গ্যাসসমূহের প্রদত্ত প্রচলিত নাম বায়ু বা বাতাস।পরিমাণের দিক থেকে শুষ্ক বাতাসে ৭৮.০৯% নাইট্রোজেন,২০.৯৫% অক্সিজেন, ০.৯৩% আর্গন,০.০৩৯% কার্বন ডাইঅক্সাইড এবং সামান্য পরিমাণে অন্যান্য গ্যাস থাকে।বাতাসে এছাড়াও পরিবর্তনশীল পরিমাণ জলীয় বাষ্প রয়েছে যার গড় প্রায় ১%।বাতাসের পরিমাণ ও বায়ুমন্ডলীয় চাপ বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন রকম হয়,স্থলজ উদ্ভিদ ও স্থলজ প্রাণীর বেঁচে থাকার জন্য উপযুক্ত বাতাস কেবল পৃথিবীর ট্রপোস্ফিয়ার এবং কৃত্রিম বায়ুমণ্ডলসমূহে পাওয়া যাবে।
অনেক আগে বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল পৃথিবীর উপরের বায়ুমণ্ডলে একটি মাত্র স্তর আছে । ১৯০২ সালে ফরাসি বিজ্ঞানী লিয় ফিলিপ তেসারেন্স দ্য বোরত পরীক্ষার মাধ্যমে দেখালেন যে বায়ুমণ্ডলে অন্তত দু’টো স্তর আছে যাদের নাম তিনি রেখেছিলেন ট্রোপোস্ফিয়ার এবং স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার।
ফিলিপ কাজ করতেন ব্যুরো সেন্ট্রাল মেটিওরলোজিকে । ১৮৯২ সালে কাজ ছেড়ে দেন বৈজ্ঞানিক গবেষণায় পুরো সময় নিয়োজিত করার জন্য। বায়ুমণ্ডল থেকে তথ্য সংগ্রহের জন্য বেশ কিছু সূক্ষ্ম পরিমাপ যন্ত্র বেলুন-সহযোগে পাঠাতেন একটি বিশেষ ভাবে নির্মিত হ্যাঙ্গার থেকে এবং তার দ্বারা এমন উঁচুতে যেতে পেরেছিলেন যা আগে কখনও হয়নি। দুশোর মতন বেলুন পাঠিয়েছিলেন তিনি। সংগৃহীত তথ্য বিশ্লেষণ করে তিনি দেখলেন বায়ুমণ্ডলে পৃথিবীর উপরে ১১ কিলোমিটার পর্যন্ত তাপমান নিয়মিত ভাবে কমে যায়; তার উপরে তাপমান স্থির থাকে। তিনি তখন বায়ুমণ্ডলকে দু’টো স্তরে বিভক্ত করার প্রস্তাব করেন, যাদের নাম দেন : ট্রোপোস্ফিয়ার এবং স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার। পরবর্তীকালে অবশ্য আরও তিনটি স্তর যুক্ত করেন : মেসোস্ফিয়ার, থার্মোস্ফিয়ার এবং এক্সোস্ফিয়ার।
সূত্র : বিংশ শতাব্দীর পদার্থবিদ্যা ও ব্যাক্তিত্ব : ডঃ শঙ্কর সেনগুপ্ত, বেস্টবুকস
সর্বশেষ সংশোধন করা : 11/14/2019