পদার্থবিজ্ঞানের স্রষ্টা বলতে গেলে যে কয়েক জনের নাম নিতে হয় তাঁদের মাঝে আর্নেস্ট রাদারফোর্ড এক জন। একেবারে ফিজিক্সের দিকপাল যেন। তাঁকে বলা হয় নিউক্লিয়ার পদার্থবিজ্ঞানের জনক। তিনিই পরমাণুর নিউক্লিয়াস আবিষ্কার করেছিলেন। তাঁর এই আবিষ্কার পদার্থবিজ্ঞানকে নিয়ে গিয়েছে অনেক দূর। ১৮৯৮ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি আলফা কণা ও বিটা কণা নিয়ে নিবন্ধ লিখেন। অবশ্য তিনি গামা কণা নিয়ে লিখতে পারেননি তখন। কারণ তখনও গামাকণা আবিষ্কৃত হয়নি। গামা রেডিয়েশন আবিষ্কৃত হয় এর দু’ বছর পর ১৯০০ সালের দিকে বিজ্ঞানী পল ভিলার্ড কর্তৃক। তাঁর কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পান ১৯০৮ সালে রসায়নে নোবেল পুরস্কার।
সুইজারল্যান্ডের এই বিজ্ঞানী ১৮৭১ সালের ৩০ আগস্ট জন্মগ্রহণ করেন।
তেজস্ক্রিয় মৌলের অর্ধায়ু নামক বিজ্ঞানের যে গুরত্বপূর্ণ বিষয়টা এটি সম্পর্কে তিনিই ধারণা দেন। তিনিই বলেন তেজস্ক্রিয় ক্ষয়ের মাধ্যমে কোনও ভারী মৌল ধীরে ধীরে অন্য কোনও মৌলে রূপান্তরিত হতে পারে। এবং ফলস্বরূপ উৎপন্ন হয় আলফা ও বিটা কণা। এই মূল ধারণাটার জন্যই মূলত তিনি তাঁর নোবেল পুরস্কারটা পান।
এই সম্পর্কে নানা পরীক্ষানিরীক্ষার পর তিনিই বলেন যে একটি হিলিয়াম পরমাণু থেকে তার ইলেকট্রন দু’টি সরিয়ে নিলে যা হয় তাই হল আলফা কণা। আর তেজস্ক্রিয় মৌল থেকে আলফা কণা নির্গত হয়। আলফা কণা হিলিয়ামেরই আয়নিত অবস্থা বলে তেজস্ক্রিয় মৌলের পাশে হিলিয়াম পাওয়া যায়। অবশ্য হিলিয়াম আয়নই যে আলফা কণা এটা বলতে পারলেও তিনি বলতে পারেননি এটা ধনাত্মক প্রকৃতির না ঋণাত্মক প্রকৃতির।
তিনি পরমাণুর গঠন ভালো ভাবে বোঝার জন্য অতি পাতলা এক স্বর্ণপাতের মাঝে আলফা কণার বিকিরণের পরীক্ষা করেন। সে পরীক্ষা থেকে তিনি ধারণা করেন পরমাণুর সমগ্র ভর তার একটি ছোট্ট কেন্দ্রে পুঞ্জিভূত। এ নিয়ে তিনি আরও পরীক্ষা করেন এবং এই পরীক্ষার পর তিনি যে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তাই পরবর্তীতে রাদারফোর্ডের মডেল রূপে পরিচিত হয়।
বিজ্ঞানের জন্য গবেষণা করেছেন প্রচুর। পেয়েছেনও প্রচুর পুরস্কার পদক। অনেক বাঘা বাঘা বিজ্ঞানীর শিক্ষক ছিলেন তিনি। বিজ্ঞানে তাঁর অবদান অনেক অনেক। তাঁর সে অবদানের জন্য তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন ।
সূত্র : বিশ্বের সেরা ১০১ বিজ্ঞানীর জীবনী, আ. ন. ম. মিজানুর রহমান পাটওয়ারি, মিজান পাবলিশার্স, ঢাকা
সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/27/2020