রাইট ব্রাদার্স

উড়োজাহাজের আবিস্কারক হিসাবে দুই ভাইয়ের নাম একত্রে রাইট ব্রাদার্স হিসাবে পরিচিত। এই দুই ভাইয়ের বড় ছিলেন উইলবার রাইট এবং ছোট ছিলেন অরভিল রাইট।

এঁদের পিতা মিলন রাইট ছিলেন পাদরি। মায়ের নাম ছিল সুসান ক্যাথরিন। বড় ভাই উইলবার জন্মগ্রহণ করেন ১৮৬৭ খ্রিস্টাব্দের ১৬ এপ্রিল ও ছোটভাই অরভিল ১৮৭১ খ্রিস্টাব্দের ১৯ আগস্ট তারিখে। উভয় ভাই ছোটবেলা থেকেই বিভিন্ন ছোটখাটো বিষয় নিয়ে গবেষণা করতে থাকেন। এঁরা কিছু দিন কাঠ খোদাইয়ের কাজ শেখেন। ১৮৮৮ খ্রিস্টাব্দের দিকে একটি ছাপাখানা কিনে একটি পত্রিকা প্রকাশনা শুরু করলেন। পত্রিকাটি জনপ্রিয়তা লাভ করলেও বড় বড় পত্রিকার চাপে পত্রিকা বন্ধ হয়ে যায়। এর পর এঁরা সাইকেল তৈরির কারখানা স্থাপন করেন।

১৮৯৬ খ্রিস্টাব্দে জার্মানি দুই বিজ্ঞানী অটো ও লিলিয়ানথাল পাখির অনুকরণে বিমান তৈরি করে ওড়ার চেষ্টা করে মৃত্যুবরণ করেন। এই সংবাদে এঁরা অত্যন্ত দুঃখিত হন। এর পর এঁরা বিমান তৈরির পরিকল্পনায় আগ্রহী হয়ে উঠেন। ১৮৯৯ খ্রিস্টাব্দে এঁরা একটি উড়োজাহাজের মডেল তৈরিতে সক্ষম হন। এর পর এঁরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনাতে চলে আসেন। এখানে এঁরা তাঁদের তৈরি বাই প্লেনের উন্নতি করার পাশাপাশি তা ওড়ানোর কৌশল নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করতে থাকেন।

১৯০৩ খ্রিস্টাব্দের ১৭ ডিসেম্বর তারিখে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলাইনার কিটিহক নামক স্থানের ডেভিল পাহাড় থেকে অরভিল প্রথম উড়োজাহাজ ওড়াতে সক্ষম হন। এই বিমানে এঁরা ১২ অশ্বশক্তিসম্পন্ন একটি ইঞ্জিন সংযোজন করেছিলেন। ইঞ্জিনটি প্রকৃতপক্ষে অরভিলের সহায়তায় তৈরি করেছিলেন উইলবার। প্রথম বার অরভিল বিমানটিকে নিয়ে মাত্র ১২ সেকেণ্ডে মাত্র ৩৬.৫ মিটার (১২০ ফুট) অতিক্রম করতে সক্ষম হয়েছিলেন। এর পরের আরও দু'টি পরীক্ষাও অলিভার করেন। চতুর্থ ও শেষ বার উইলবার পুরো এক মিনিট আকাশে থেকে ৮৫০ ফুট দূরত্ব অতিক্রম করেন।

১৯০৮ খ্রিস্টাব্দে এঁরা ফ্রান্সে আসেন এবং এখানে বিমানের উন্নতির চেষ্টা অব্যাহত রাখেন। ১৯১২ খ্রিস্টাব্দে উইলবার টাইফয়েড রোগে মৃত্যুবরণ করেন। এর পর অরভিল একা তাঁর গবেষণার কাজ চালিয়ে যেতে থাকেন। ১৯১৬ খ্রিস্টাব্দে ইনি রাইট অ্যারোনটিক্যাল ল্যাবরেটরি স্থাপন করেন। ১৯৪৮ খ্রিস্টাব্দের ৩০ জানুয়ারি মৃত্যবরণ করেন।

সূত্র : বিশ্বের সেরা ১০১ বিজ্ঞানীর জীবনী, আ. ন. ম. মিজানুর রহমান পাটওয়ারি, মিজান পাবলিশার্স, ঢাকা