প্রচলিত ধারণা: শুধুমাত্র দরিদ্র পরিবারের শিশুরাই বাড়ি থেকে পালিয়ে পথশিশুতে পরিণত হয়। যে সব শিশু রাস্তায় থাকে তারাই শুধুমাত্র খারাপ হয়।
বাস্তব : যে কোনও শিশুই সঠিক দেখাশোনার অভাবে বাড়ি ছেড়ে চলে যেতে পারে। প্রত্যেকটি শিশুরই মর্যাদার সঙ্গে বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে এবং কোনও অভিভাবক / পরিবার / স্কুল / গ্রাম যদি তাকে তার এই অধিকার থেকে বঞ্চিত করে তা হলে তারা তাদের বাচ্চাকে হারাতে পারে।
পথশিশুদের অধিকাংশই বাড়ি থেকে পালিয়ে আসে । এই শিশুরা বাড়ি ছাড়ে বিভিন্ন কারণে। কখনও ভালো জীবনযাত্রার আশায়, কখনও বা বড় শহরের আকর্ষণে, কখনও আবার লোভের বশবর্তী হয়ে, কখনও বা কঠিন শিক্ষা ব্যবস্থার চাপে বাড়ির অত্যাচার থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য এরা বাড়ি ছেড়ে শহরে আসে ও তাদের জীবন আরো দুর্বিষহ হয়।
পথশিশুরা কখনওই খারাপ হয় না, পরিস্থিতির চাপে তারা খারাপ হয়।
এই শিশুরা অনেক সময়েই দু’বেলা খাবার পর্যন্ত জোগাড় করে উঠতে পারে না। এবং এরা অক্ষমতার কারণে অত্যাচারিত হয়। এক বার রাস্তায় এলে তারা বিভিন্ন ভাবে শোষিত হতে শুরু করে এবং সমস্যায় পড়ে। অপেক্ষাকৃত বড় বয়সের বাচ্চাদের সংস্পর্শে ছোট বয়সের বাচ্চারা এলে তারা কাগজ কুড়ানো বা অন্য কোনও সহজ উপার্জনের পথ নেয় বা বিভিন্ন বেআইনি কাজে অভ্যস্ত হয়ে ওঠে যেমন পকেটমারি, ভিক্ষে করা, মাদক দ্রব্যের আদান প্রদান করা।
শিশুর বাড়ি থেকে পালায় বিভিন্ন কারণে-
মৌলানা আজাদ কলেজের ডিপার্টমেন্ট অফ কমিউনিটি মেডিসিন এবং সাইক্রিয়াট্রির শিশু চিকিৎসক দীপ্তি পাগড়ে, জি. এস. মিনা, আর. সি. জিলোহা এবং এম. এম. সিং, “পর্যবেক্ষণ হোমে থাকা যৌন নিপীড়নের শিকার পথশিশুরা” নামে ২০০৩-২০০৪ সালে দিল্লিতে একটি তথ্য নির্ভর গবেষণা করেছিলেন। এতে দেখা যায়, বাড়ি থেকে পালিয়ে আসা বালকদের মধ্যে শতকরা ৩৮.১ শতাংশ শিশু যৌননিগ্রহের শিকার। ডাক্তারি পরীক্ষায় দেখা গেছে ৬১.১ শতাংশের শরীরে অত্যাচারের চিহ্ন রয়েছে, ৪০.২ শতাংশ শিশুর ব্যবহারে যৌন নিপীড়নের প্রভাব পড়েছে। জোর করে যৌন সংসর্গ করা হয়েছে ৪৪.৪ শতাংশ শিশুর সঙ্গে। ২৫ শতাংশ শিশু যৌন রোগের শিকার। অচেনা লোকেরাই বেশির ভাগ ক্ষেত্রে শিশুদের ওপর যৌন নিপীড়ন করেছে ।
সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/19/2020