অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

বিরলতম ‘হান্টার সিনড্রোমে ’ আক্রান্ত শিলিগুড়ির প্রীতম

বিরলতম ‘হান্টার সিনড্রোমে ’ আক্রান্ত শিলিগুড়ির প্রীতম

তিন বছর বয়সেও ছেলে কথা বলছে না দেখে সে বোবা বলে মনে হয়েছিল বাবা –মায়ের। তখন কি আর তাঁরা জানতেন বিরলতম রোগে আক্রান্ত তাঁদের আদরের প্রীতম। বয়স বাড়তে নানা উপসর্গ শুরু হতে উদ্বিগ্ন হন তাঁরা। ঘন ঘন সর্দি-কাশি, কান দিয়ে পুঁজ পড়া। এর পর লম্বা হতে শুরু করে জিভ। শক্ত হয়ে যায় শরীরের গাঁটগুলি। মানসিক বিকলাঙ্গের উপসর্গ দেখা দিতে শিলিগুড়ির হাসপাতাল, ডাক্তারের দরজায় দরজায় ঘোরা শুরু করেছিল হালদার পরিবার। ততদিনে যকৃৎ, হৃদযন্ত্র বড় হয়ে গিয়েছে। শ্বাসনালীতে সংক্রমণ দেখা দিয়েছে। স্থানীয় চিকিত্সকরা কিছুই করতে না পারায় শেষ পর্যন্ত বেশ কিছু টাকা জোগাড় করে সন্তানকে নিয়ে ভেলোরে যান প্রীতমের বাবা-মা। সেখানেই প্রথম জানা যায়, এনজাইমঘটিত বিরলতম ‘হান্টার সিনড্রোমে’ আক্রান্ত সাত বছরের শিশু প্রীতম হালদার। যে রোগে এখনও পর্যন্ত পৃথিবীতে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ২,০০০ মানুষ। এ দেশে সংখ্যাটি ৭ পেরোয়নি।

ফলে ঘোর বিপাকে পড়েছেন প্রীতমের অভিভাবকেরা। রোগটি স্থায়ী নিরাময়ের কোনও সম্ভাবনা নেই বলে ভেলোরের খ্রিস্টান মেডিক্যাল কলেজের চিকিত্সকেরা জানিয়ে দিয়েছেন। কিন্তু বাঁচিয়ে রাখতে চিকিত্সা চালিয়ে যেতে হবে, যার খরচ পরিমাণে রাজসিক। চিকিত্সা বলতে এনজাইম থেরাপি। তার জন্য সপ্তাহে ২ লক্ষ টাকা বলে প্রেসক্রিপশনেই লিখে দিয়েছেন ভেলোরের চিকিত্সক অতনু দত্ত। শুনে মাথায় আকাশ ভেঙে পড়েছে প্রীতমের বাবা প্রশান্ত হালদারের। সিমেন্ট বিক্রির দোকানে কর্মচারী তিনি। সামান্য মাইনে। তার উপর নিজেও অসুস্থ তিনি। কানে ভালো শুনতে পান না। মস্তিষ্কের একটি নার্ভ শুকিয়ে যাচ্ছে। শিশুটির রোগ ও পরিবারটির আর্থিক অবস্থার কথা শুনে এগিয়ে এসেছেন শিলিগুড়ির বিধায়ক রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য। তিনি নিজেও চিকিত্সক। তাঁরই উদ্যোগে শিশুটির চিকিত্সার জন্য পরিবারের পক্ষ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে সাহায্য চাওয়া হয়েছে। কেবল মাত্র মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলের উপরে ভরসা করে ব্যয়বহুল ওই চিকিত্সা সম্ভব নয় বুঝে সোশ্যাল মিডিয়ায় বিশ্ব জুড়ে সাহায্য চেয়ে আবেদন জানানোর পরিকল্পনা নিয়েছেন শিলিগুড়ির বিধায়ক। তিনি বলেন, ‘ইন্টারনেট ঘেঁটে আমি জানতে পেরেছি, গোটা বিশ্বে ২ হাজার রোগী রয়েছেন এই সমস্যায়। প্রীতমের বাবা বলেন, ‘ভেলোরের চিকিত্সক আমাদের জানিয়েছেন, এখনও পর্যন্ত তিনি এ দেশে সাত জন শিশুর খোঁজ পেয়েছেন এই রোগে।’ ভেলোরের ওই চিকিত্সক অতনু দত্তই প্রথম বুঝতে পারেন ‘হান্টার সিনড্রোমে’ আক্রান্ত হয়েছে প্রীতম। এনজাইমের ঘাটতি বা একেবারেই অনুপস্থিতির কারণে এই রোগ বাসা বাঁধে শরীরে। তাতে দেহের বিকাশ বিলম্বিত হয়। হাঁটতে বা কথা বলা শিখতে দেরি হয়। ঠোঁট, জিভ, নাসারন্ধ্র পুরু হয়ে যায়। হাতের তালু থাবার চেহারা নেয়। শরীরের সমস্ত যন্ত্র বড় হতে থাকে। দেখা দেয় শ্বাসকষ্টও। শিলিগুড়ির শিশু চিকিত্সক সুবল দত্ত বলেন, ‘রোগটির নাম এবং লক্ষ্মণ জানা থাকলেও আমার চিকিত্সক জীবনে এমন রোগী আগে কখনও দেখিনি। পাঁচ-ছয় বছর বয়স না-হলে এই রোগটি ধরা পড়ে না। তা ছাড়া প্রাথমিক লক্ষ্মণ দেখে স্পষ্ট করে কিছু বলাও যায় না।’ প্রীতমের মা টুম্পা দেবী বলেন, ‘রোগের এ সব জটিল ব্যাপার আমরা কী বুঝি। ডাক্তারবাবুরা বলছেন চিকিত্সা করাতে সপ্তাহে ২ লক্ষ টাকা লাগবে। কোথা থেকে এত টাকা পাব?’ ছেলেকে বাঁচাতে পরিবারটির দিশেহারা অবস্থা।

সূত্র : সঞ্জয় চক্রবর্তী, এই সময়, ২ এপ্রিল ২০১৫

সর্বশেষ সংশোধন করা : 2/14/2020



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate