আধুনিকীকরণের জেরে জনস্বাস্থ্য ও শৌচাগারের ব্যবস্থার উন্নয়ন হয়। আমাদের সমীক্ষার ফলাফল প্রচলিত এই ধারণাকেই সমর্থন করছে। শৌচাগার ব্যবস্থার উন্নতিতে সামাজিক কাঠামোগত বহুমুখী উপাদান নির্ভর দৃষ্টিভঙ্গি অত্যন্ত জরুরি। বর্তমানে ভারতে এ সংক্রান্ত যে দু’টি প্রচারাভিযান চলছে, সেই ‘সম্পূর্ণ অনাময় কর্মসূচি’ এবং ‘মহাত্মা গান্ধী স্বচ্ছ ভারত অভিযান’-এ প্রকাশ্যে মলত্যাগের অভ্যাস বন্ধ করতে বাড়িতে শৌচাগার বানিয়ে দেওয়ার উপর জোর দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই সব শৌচাগার আদৌ ব্যবহার করা হচ্ছে কিনা, তা এক বড় প্রশ্ন। আবার শৌচাগার ব্যবহারের ফলে রোগের সংক্রমণ কমে বলে যে ধারণা করা হয় তা এখনও যথেষ্ট পরীক্ষিত নয়। জনস্বাস্থ্য উন্নয়নের লক্ষ্য পূরণ করতে হলে শৌচাগার ব্যবস্থাকে মানুষের অর্থপূর্ণ ব্যবহারগত পরিবর্তনের সঙ্গে সংযুক্ত করতে হবে। আমাদের সমীক্ষায় সামাজিক কাঠামোগত এবং সাংস্কৃতিক বেশ কিছু উপাদান নেওয়া হয়েছে, যেগুলি শৌচাগার ব্যবস্থার সঙ্গে জড়িত। শিক্ষা এবং পেশার প্রকৃতি এ সংক্রান্ত সচেতনতার সঙ্গে সম্পর্কিত। স্কুলের মতো সামাজিক প্রতিষ্ঠান এবং শ্রমের বাজারও এর উপর প্রভাব বিস্তার করে। অসংগঠিত থেকে সংগঠিত ক্ষেত্রে গেলে শ্রমের বাজারের গঠনগত উপাদানের পরিবর্তন হয়, তার ইতিবাচক প্রভাব পড়ে শৌচাগার ব্যবস্থার উপর।
আমরা আগেই বলেছি, নড়বড়ে শৌচাগার ব্যবস্থার প্রভাব নিয়ে তথ্যের যথেষ্ট অভাব রয়েছে। এই সমীক্ষায় সে বিষয়ে আলোকপাত না করা হলেও জনস্বাস্থ্যের কারণে এ নিয়ে গবেষণা হওয়া দরকার। যথাযথ শৌচাগার পরিকাঠামো গড়ে তোলার ক্ষেত্রে সরকারি ব্যর্থতা, বেসরকারি ক্ষেত্রের সামনে নতুন সুযোগ ও সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করেছে। তবে এ ক্ষেত্রে জনস্বাস্থ্যের বিষয়টি জড়িত থাকায় বেসরকারি পরিষেবার উপরেও সরকারি নিয়ন্ত্রণ থাকা বাঞ্ছনীয়। প্রায়শই সরকারি সংস্থাগুলি পরিকল্পনা রূপায়ণ, নিয়ন্ত্রণ ও যথাযথ মান বজায় রাখতে ব্যর্থ হয়। এর সুযোগ নিয়ে অনেক সময় বেসরকারি সংস্থাগুলি শহরের অননুমোদিত জায়গায় শৌচাগার পরিষেবা চালায়। সৃষ্টি হয় দূষণ ও নোংরা। সংশ্লিষ্ট এলাকার বাসিন্দাদের চরম দুর্ভোগে পড়তে হয়। এমনকী তাঁরা প্রান্তিক সামাজিক অবস্থানেও পৌঁছে যেতে পারেন।
ড.বিজয় কে পিল্লাই এবং রূপাল পারেখ
(লেখকদ্বয় টেক্সাস বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘স্কুল অফ সোশাল ওয়ার্ক’-এ যথাক্রমে অধ্যাপক ও গবেষক)
Email- pillai@uta.edu
সূত্র : যোজনা, জানুয়ারি, ২০১৫।
সর্বশেষ সংশোধন করা : 4/24/2020