বর্তমানে বছরের ১ এপ্রিল পর্যন্ত দেশের বসবাসযোগ্য ১৬,৯৬,৬৬৪টি এলাকার মধ্যে মাত্র ১২,৪৯,৬৯৫টি এলাকায় মাথাপিছু প্রতি দিন ৪০ লিটার পানীয় জলের জোগান দেওয়া সম্ভব হয়েছে। কিন্তু বহু গ্রামকেই আজও পানীয় জলের জন্য নির্ভর করে থাকতে হয় গ্রামের পুকুর জলাশায় সহ অন্য কোনও প্রাকৃতিক উৎসের উপর। কিন্তু গরমের শুখা মরশুমে এই সমস্ত পুকুর বা জলাশয়ও জলশূন্য হয়ে পড়ে। সত্যি কথা বলতে কী, আমাদের শহরগুলিতে নিকাশি ব্যবস্থার উপর চাপ কতখানি, তা খতিয়ে দেখার কোনও বাস্তবসম্মত উপায় নেই। কারণ দেশের নাগরিকের জল আহরণের উৎস বা মাধ্যম যেমন ভিন্ন, তেমনই তাদের বর্জ্য নোংরা জল নিকাশির যে ব্যবস্থা, তা-ও অঞ্চলভেদে ভিন্ন প্রকৃতির। যে ভাবে আমাদের দেশে বর্তমানে নিকাশি ব্যবস্থার হিসাবনিকেশ করা হয়, তা এখনও পরীক্ষানিরীক্ষার পর্যায়ে রয়ে গেছে। তবে মোটামুটি হিসাব করে দেখা গেছে যে, শহর পুর কর্তৃপক্ষগুলি যে পরিমাণ জল সরকারি ভাবে জোগান দেয়, তার প্রায় ৮০ শতাংশ ফিরে আসে বর্জ্য নোংরা জল হিসেবে। জাতীয় পরিবার স্বাস্থ্য সমীক্ষা ২০০৫-০৬-এর প্রাপ্ত পরিসংখ্যান অনুযায়ী, পাইপলাইন মারফত জল সরবরাহ ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে মাত্র ১৮.৮ শতাংশ শৌচাগার।
বিশ্বের প্রায় ২৫ লক্ষ মানুষ শৌচাগার সহ উপযুক্ত অনাময় সুযোগ থেকে এখনও বঞ্চিত। এর মধ্যে এক তৃতীয়াংশেরই বাস ভারতে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, দেশের প্রায় ৬২ কোটি ৬০ লক্ষ নাগরিক কাছাকাছি কোনও শৌচাগারের সুযোগ না থাকায় উন্মুক্ত স্থানে প্রকৃতিক কাজকর্ম সারতে বাধ্য হন। জাতীয় নমুনা সমীক্ষা দফতরের ২০১২ সালের ৬৯-তম সমীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী, দেশের ৫৯.৪ শতাংশ গ্রামীণ মানুষ এবং শহরাঞ্চলের ৮.৮ শতাংশ অধিবাসীর নিজস্ব শৌচাগার বলতে কিছুই নেই।
সূত্র : যোজনা, জানুয়ারি ২০১৫
সর্বশেষ সংশোধন করা : 11/14/2019