অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

বয়স্কদের ভুলে যাওয়া রোগ বা অ্যালঝাইমার্স

বয়স্কদের ভুলে যাওয়া রোগ বা অ্যালঝাইমার্স

  1. তাহলে বয়সটাই কি এই রোগের কারণ?
  2. অ্যালঝাইমার্সের আলাদা কোনও ধরন হতে পারে?
    1. পশ্চেরিয়াল সেরিব্রাল অ্যালঝাইমার্স
    2. এলপিএ-লোগো পেনিক অ্যালঝাইমার্স
    3. ফ্রন্টাল অ্যালঝাইমার্স
  3. ডিমেনশিয়ার ক্ষেত্রে লক্ষণ কেমন?
  4. সাধারণ ভুলে যাওয়ার সঙ্গে তাহলে এর কোনও পার্থক্য আছে?
  5. এটা কি অ্যালঝাইমারের রোগী বুঝে করছেন?
  6. সাধারণ ভুলে যাওয়া আর অ্যালঝাইমার রোগীর ভুলে যাওয়াটা বোঝা যাবে কীভাবে?
  7. রোগটি হয় কেন?
  8. অ্যালঝাইমারের ক্ষেত্রে নাকি বায়োপসি করা হয়। তাহলে বায়োপসির মাধ্যমে কি সেটা জানা যায়?
  9. আগাম অ্যালঝাইমার্স হতে পারে— জানার কি তাহলে কোনও উপায় আছে?
  10. তাহলে রোগ নির্ণয় কীভাবে সম্ভব?
  11. শুরুর দিকে তাহলে সমস্যাটা কেমন হতে পারে?
  12. বাড়ির লোকের ভূমিকা কতটা?
  13. তাহলে অ্যালঝাইমার্স হচ্ছে কিনা বোঝার জন্য কোনও টেস্ট করা যায় না?
  14. রিস্ক ফ্যাক্টর কী কী?
  15. প্রিভেনশন ইজ বেটার দ্যান কিওর-কথাটা এই রোগের ক্ষেত্রে কতটা সত্যি?
  16. ব্রেন অ্যাক্টিভ রাখাটা কি উপকারী হতে পারে?
  17. চিকিৎসা কীভাবে করা হয়?
  18. বাড়ির লোক কী করে বুঝবেন যে একটা সমস্যা শুরু হতে চলেছে?

অ্যালঝাইমার নামে একজন বিজ্ঞানীর নাম থেকে যিনি প্রথম এটা নিয়ে কাজ করেন। রোগটির পুরো নাম অ্যালঝাইমার ডিমেনডশিয়া।

ডিমেনশিয়া অনেক ধরনের হতে পারে তারমধ্যে অ্যালঝাইমার্স একটা ধরন। এছাড়া আছে এল বি ডি (এই রোগটির ক্ষেত্রে ব্রেনের কোষের মধ্যে Lewy body নামে এক ধরনের বস্তু জমতে থাকে), ভাসকুলার ডিমেনশিয়া (এর ফলে মস্তিষ্কের মধ্যে রক্ত চলাচল কম হয়ে কোষগুলি শুকিয়ে যায়)। মস্তিষ্কের কগনাইটিভ ক্ষমতা বা হায়ার ফাংশান ক্রমশ থাকে এই ডিমেনশিয়ার জন্য। ফলে ডিমেনশিয়ার সাধারণ উপসর্গগুলি অ্যালঝাইমারের মধ্যে থাকলেও কিছু স্বতন্ত্রতাও থাকে। অ্যালঝাইমারের ক্ষেত্রে মস্তিষ্কের ক্রিয়াকলাপগুলি খুব ধীর লয়ে কমতে থাকে। ভাসকুলারের ক্ষেত্রে এটা খুব হঠাৎ করে তাড়াতাড়ি হয়। অ্যালঝাইমার্স বরং বলা যায় ডিমেনশিয়ার মধ্যে সবথেকে জটিল এবং গুরুত্বপূর্ণ একটা ধরন। আর দুঃখের বিষয় মানুষের গড় আয়ু যত বাড়ছে, ততই বাড়ছে এই অ্যালঝাইমার্স।

তাহলে বয়সটাই কি এই রোগের কারণ?

আগে ভাবা হত এটা বয়স বাড়লে হবেই। ৬৫ বছরের পর এর সম্ভাবনা বেশি হয়। যদিও তার আগেও হতে যে পারে না এমন নয়। পরিসংখ্যান বলছে ৬৫-বছর বয়সিদের প্রতি ১৪/১৬ জনের মধ্যে ১ জনের হতে পারে। আবার ৮০-র কোটায় যাঁদের বয়স তাঁদের প্রতি ৬ জনের মধে ১ জনের অ্যালঝাইমার্সের ঝুঁকি রয়েছে। ৬৫ বছরের পর থেকে প্রতি ৫ বছর অন্তর এই ঝুঁকিটা দ্বিগুণ হয়ে যায়। তবে শুধু বয়সই একমাত্র কারণ নয়। কারণ ৬৫ বছরের কম বয়সিদেরও এই রোগের শিকার হতে দেখা যাচ্ছে।

অ্যালঝাইমার্সের আলাদা কোনও ধরন হতে পারে?

হতে পারে। যেমন— পিসিএ।

পশ্চেরিয়াল সেরিব্রাল অ্যালঝাইমার্স

- এটা মস্তিষ্কের পিছনের অংশে হয়, যার ফলে কোনও বস্তু চিনতে পারবেন না রোগী— সামনে মোবাইল রাখা থাকলেও সেটা যে মোবাইল বুঝতে সমস্যা হবে। এঁদের দেখার ক্ষেত্রে এবং স্থান সম্পর্কিত একটা সমস্যা হয়। সিঁড়ি দিয়ে নামার সময় ধাপ বুঝতে পারেন না রোগী।

 

এলপিএ-লোগো পেনিক অ্যালঝাইমার্স

— এটায় অদ্ভুত একটা বাচনভঙ্গির সমস্যা হয় রোগীর। এঁরা এত ধীরে ধীরে কথা বলেন যেন মনে হয় কথা বলতে খুব কষ্ট হচ্ছে। খুব থেমে থেমে কথা বলেন এবং শব্দ খুঁজে পাওয়ার ক্ষেত্রে সমস্যা হতে পারে।


ফ্রন্টাল অ্যালঝাইমার্স

- এর ক্ষেত্রে যে মানুষটা যেমন নন, তিনি তেমন হয়ে ওঠেন। যিনি অত্যন্ত সভ্য, ভদ্র একজন মানুষ তিনি হঠাৎ অশ্লীল শব্দ বলছেন, স্ত্রী ছাড়া কারও দিকে কোনওদিন তাকাননি এমন মানুষ অন্য নারীর দিকে তাকাচ্ছেন— সামাজিকভাবে যে ব্যবহারটা যথাযথ নয়, তিনি তেমন করতে থাকেন।

ডিমেনশিয়ার ক্ষেত্রে লক্ষণ কেমন?

ডিমেনশিয়ার ক্ষেত্রে স্মৃতির সমস্যা হয়। প্রথমে স্মৃতি হ্রাস বা ভুলে যাওয়া দিয়ে শুরু হয়। পরে সম্পূর্ণ স্মৃতিভ্রংশ হতে পারে। বাল্যস্মৃতি, অতীতটা ঠিক থাকে, অথচ বর্তমানটা একেবারেই তাঁরা ভুলে যান।

সাধারণ ভুলে যাওয়ার সঙ্গে তাহলে এর কোনও পার্থক্য আছে?

আছে। সাধারণ ভুলে যাওয়াটা স্বাভাবিক। বয়সজনিত কারণে ভুলে গেলে, ধামাচাপা দেওয়ার তাগিদটা থাকে না। অথচ অ্যালঝাইমার্স রোগীদের ক্ষেত্রে অবচেতনভাবেই রোগীরা বানিয়ে বানিয়ে কিছু বলে নিজের স্মৃতিশক্তির অক্ষমতা ঢাকার চেষ্টা করেন। তিনি নিজে থেকেই বানিয়ে বানিয়ে জবাব দেন। হয়তো দেখা যায় একদিন তিনি ব্যাংকে যাননি, অথচ বেমালুম বলে দিলেন গেছেন। ব্যাংকের নাম ভুলে গেছেন, বানিয়ে এমন একটা নাম বললেন যার কোনও অস্তিত্বই নেই আদপে। এইভাবে ভুল তথ্য দিয়ে নতুন করে একটা বিষয় সাজিয়ে দিচ্ছেন।

এটা কি অ্যালঝাইমারের রোগী বুঝে করছেন?

না একেবারেই নয়। রোগী কিন্তু বুঝছেন না তিনি কী করছেন, মস্তিষ্কের নিজস্ব কাজই এই ভুল তথ্য, ভুল স্মৃতি সরবরাহ করা।

সাধারণ ভুলে যাওয়া আর অ্যালঝাইমার রোগীর ভুলে যাওয়াটা বোঝা যাবে কীভাবে?

সাধারণ ভুলে যাওয়ায় একজন বয়স্ক মানুষ একটা নাম বা শব্দ ভুললে সেটা বাড়ির বাইরের কিছুর সঙ্গে সম্পর্কিত হতে পারে। নিজের ছেলের, নাতির নাম সাধারণত কেউ ভোলেন না। যুক্তি, বুদ্ধি, বোধও ঠিক থাকে। অ্যালঝাইমার রোগীর কিন্তু তা নয়, এঁদের পরিবারের সঙ্গে সম্পর্কিত বিষয়ও ভুল হয়। নিজের স্ত্রীর নাম ভুলে যেতে পারেন, এমনকী কখনও কখনও দেখা যায় নিজের নামও মনে করতে পারছেন না।

রোগটি হয় কেন?

এটা নিয়ে বিজ্ঞানীরা এখনও নিশ্চিত নন। চলছে নানা গবেষণা, পরীক্ষা। তবে মস্তিষ্কের ভিতরে এবং বাইরে দুটো জিনিসের ফলে এটা হয়। যাকে আমরা বলি ঘরে বাইরে শত্রু। একটু বুঝিয়ে বলি, মস্তিষ্কের মধ্যে একটা আমাদের সংবেদ উদ্দীপনা বয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য কিছু জৈব রাসায়নিক পদার্থ আছে যারা এক স্নায়ুকোষ থেকে অন্য স্নায়ুকোষে উদ্দীপনা পৌঁছে দেয়। স্মৃতিও একইভাবে এই স্নায়ুকোষের সরণি বেয়ে পৌঁছে যায় স্মৃতির সিন্দুকে যার নাম হিপোক্যাম্পাস। এই স্নায়ু উদ্দীপক যৌগগুলি microtubule পথে চলতে থাকে। সমান্তরালভাবে রেললাইনের মতো এই টিউবিউলগুলি চলে। এই টিউবিউলকে ধরে রাখার জন্য থাকে Tau protein। কারণ এই microtubule দিয়ে ব্রেনের পুষ্টি উপাদান যায় মস্তিষ্কের বেঁচে থাকার জন্য। এই Tau proteinগুলি যুক্ত থাকে ফসফেট দিয়ে। অ্যালঝাইমারে অতিরিক্ত ফসফেট জমে গিয়ে বন্ধনটা নষ্ট হয়ে যায়। অনেকগুলো Tau খুলে জমে গিয়ে নিজেদের মধ্যে জড়িয়ে যায়—একেই বলা হয় নিউরো ফিব্রিলারি ট্যাঙ্গেল। ক্রমশ এরা Synapse এর দিকে চলে আসে। তখন স্নায়ু উদ্দীপকগুলি বাহিত হয়ে তথ্য অন্য স্নায়ুতে পৌঁছানোর জন্য অন্য একটি প্রোটিন লাগে যার নাম Kibra protein। এই ট্যাঙ্গেলগুলো জমে গিয়ে Kibra protein গুলি ধ্বংস করে দেয়। এটাকে ঘরের শত্রু বলা যায়।

আবার নিউরনের বাইরে অ্যামালয়েড প্লাক জমে। এটা একটা প্রোটিন। বিটা অ্যাময়লয়েড জমে গিয়ে তৈরি হয় অ্যাময়লয়েড প্লাক। আগে বলা হত, এটা বেশি পরিমাণে তৈরির ফলে সমস্যা তৈরি হয়। সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, অ্যালঝাইমারের রোগীদের এই প্লাকের ড্রেনেজটা স্বাভাবিক মানুষের থেকে অন্তত ৩০% কম হচ্ছে, ফলে প্লাক জমে গিয়ে Synapse-এর গায়ের মেমব্রেনগুলো ফুটো হয়ে ক্যালশিয়াম ভিতরে ঢুকে যায়, এছাড়াও ফ্রি র‌্যাডিকালগুলিও কোষগুলিকে নষ্ট করতে সাহায্য করে। এই নিউরো ফ্যাব্রিলারি ট্যাঙ্গেল এবং অ্যাময়লয়েড প্লাক জমা এই দুটিই মূলত অ্যালঝাইমারের কারণ।

অ্যালঝাইমারের ক্ষেত্রে নাকি বায়োপসি করা হয়। তাহলে বায়োপসির মাধ্যমে কি সেটা জানা যায়?

না। বায়োপসির মাধ্যমে সেটা মৃত্যুর পর জানা যায়।

আগাম অ্যালঝাইমার্স হতে পারে— জানার কি তাহলে কোনও উপায় আছে?

অ্যালঝাইমার হতে পারে কিনা আগাম বলা মুশকিল। এখনও পর্যন্ত দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিজ্ঞানভিত্তিকভাবে কোনও পরীক্ষার মাধ্যমে আগাম অ্যালঝাইমার্স নির্ণয় করা যায় না।

তাহলে রোগ নির্ণয় কীভাবে সম্ভব?

লক্ষণ দেখে রোগ নির্ণয় করতে হয়। সেটা অধিকাংশ ক্ষেত্রে বাড়ির লোক রোগীর এই উপসর্গগুলি বুঝতে পারেন এবং তখন রোগীর কিছু একটা সমস্যা হচ্ছে সন্দেহ হওয়ার ফলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন। তখন চিকিৎসক মিনিমেন্টাল সেস্টাস এক্সামিনেশন করেন। মূলত এর চারটি স্তর রয়েছে- মিনিমেন্টাল কগনাইটিভ ইমপেয়ারমেন্ট (এমসিআই), মাইল্ড মডারেট এবং সিভিয়ার। আমরা চাইব রোগীরা শুরুর দিকে বা মাঝামাঝি স্তরে ধরা পড়ুন। নাহলে স্তর যত বাড়বে, সমস্যা তত বাড়বে। জেনে রাখা ভালো, খুব বাড়াবাড়ি পর্যায়ে কোনও ওষুধ খুব একটা কাজ করে না।

শুরুর দিকে তাহলে সমস্যাটা কেমন হতে পারে?

একদম শুরুর দিকে সামান্য কিছু সমস্যা হতে পারে, অল্প-স্বল্প সাধারণ স্মৃতির সমস্যা বা আরও পরে বুদ্ধি-বিবেচনার সমস্যা হতে পারে। তারপর ভুলে যাওয়ার সমস্যা ক্রমশ বাড়তে পারে। বাড়ির ঠিকানা ভুলে যেতে পারেন বা পথ হারিয়ে ফেলতে পারেন। সিভিয়ার স্তরের রোগীদের এবিএল অর্থাৎ রোজের জীবনযাত্রা প্রভাবিত হয়। একেবারে পরনির্ভরশীল হয়ে যেতে হয়। তাঁদের বাইরে ছাড়া যাবে না কারণ এঁরা রাস্তা চিনতে পারবেন না। ঘরের মধ্যে বাথরুম খুঁজে পান না। চিকিৎসকরা সাবধান করি, বাথরুমের ভিতরে যেন লক না থাকে, তাহলে লক করলে খুলতে পারবেন না তিনি। জামার বোতাম লাগানো, জুতোর ফিতে বাঁধা বা প্যান্ট-শার্ট পরার মতো কাজগুলোও তিনি করতে পারবেন না।

বাড়ির লোকের ভূমিকা কতটা?

বিদেশে তো ট্রেনিং দেওয়া হয় পরিবারের সদস্যদের। যিনি রোগীকে সামলাবেন তাঁর দায়িত্ব এই স্তরে ওষুধের চেয়েও বেশি। তাঁর রোগটি সম্পর্কে ভালো করে জানা দরকার। বাইরের দেশে ট্রেনিং হয়, এখানেও ব্যক্তিগতভাবে বা অল্প বিস্তর কিছু প্রতিষ্ঠানে এই ধরনের প্রশিক্ষণ ইদানী শুরু হয়েছে। আমরা চিকিৎসকরাও বাড়ির লোকেদের বোঝাই। এই রোগীদের সামলাতে সত্যিই রীতিমতো ট্রেনিং দরকার। তাই আমরা নানা সেমিনার, ক্যাম্প করি সচেতনার জন্য।

তাহলে অ্যালঝাইমার্স হচ্ছে কিনা বোঝার জন্য কোনও টেস্ট করা যায় না?

আচরণটা বোঝাই আসল। তাই দরকার খুব তাড়াতাড়ি পরীক্ষা এবং চিকিৎসা শুরু। অনেক সময়ে এঁরা খুব আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠেন, প্রচণ্ড রেগে যাচ্ছেন, যাকে যা নয় তাই বলছেন, কেউ উপস্থিত নেই তাকেই এসেছে বলছে— এমন নানা সমস্যায় জেরবার হয়ে বাড়ির লোক অনেকে রোগীকে নিয়ে আসেন। তখন আমরা মিনিমেন্টাল স্টেটাস এক্সামিনেশন করাই। কখনও স্ক্যানিং এবং রক্ত পরীক্ষা করিয়ে দেখা হয় অন্য কোনও কারণ বা ঘটনা ঘটছে কিনা।

রিস্ক ফ্যাক্টর কী কী?

দুটো জিনিস— বয়স এবং জিনের প্রভাবটা অস্বীকার করা যায় না। বয়স বাড়বে, আর বয়সের সঙ্গে সঙ্গে এই সমস্যা বাড়বে— কারও বেশি কারও কম। আবার জিনগত একটা প্রভাবও কাজ করে। যাদের মধ্যে অ্যাপোলাইপোপ্রোটিনই ই ফোর-জেনেটিক প্রবণতা টেন্ডেন্সি থাকলে তাদের মধ্যে অ্যালঝাইমার্সের ঝুঁকি বেশি লক্ষ করা যায়। তবে সেটা পুরোপুরি নিশ্চিত বলা যায় না। এখনও এই নিয়ে বিভিন্ন গবেষণা চলছে। আবার কিছু কিছু ঝুঁকি রয়েছে যা পরিবর্তন করা সম্ভব। যেমন ডায়াবেটিস, কোলেস্টরল, উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা এগুলোও সমস্যা বাড়াতে পারে। এগুলির নির্দিষ্ট চিকিৎসা আছে এবং এগুলি নিরূপণ করা গেলে কমতে পারে অনেক সমস্যাই। তাই জীবনশৈলী পরিবর্তন দরকার।

প্রিভেনশন ইজ বেটার দ্যান কিওর-কথাটা এই রোগের ক্ষেত্রে কতটা সত্যি?

মাথায় রাখতে হবে সপ্তাহে তিনদিন ভালোরকম শারীরিক পরিশ্রম করলে মস্তিষ্কের কার্যকারিতা ভালো থাকে। আর আছে সুষম খাদ্যাভ্যাস। ডায়েটের ক্ষেত্রে মেডিটেরিয়ান ডায়েট মেনে চলুন। এতে থাকে প্রচুর শাকসবজি, ফল এবং মাছ। মাছের ওমেগা থ্রি শরীরের জন্য খুব উপকারী। এছাড়া কার্বোহাইড্রেট, রিফাইন্ড সুগার, ঠান্ডা পানীয়, তেল-মশলা বাদ দিন।

ব্রেন অ্যাক্টিভ রাখাটা কি উপকারী হতে পারে?

অবশ্যই। নিয়মিত কাগজের পাজল, শব্দছক, সুদোকু-করুন। বাড়িতে আলোচনা করুন কী পড়লেন। সবসময় আপনার মস্তিষ্ককে কিছু না কিছু কাজে বা চ্যালেঞ্জের মধ্যে রাখার চেষ্টা করুন। প্রতিদিন নতুন করে কিছু শেখার চেষ্টা করা গেলে এইসব কিছু মস্তিষ্ককে সক্ষম এবং সতেজ রাখতে সাহায্য করে। পাশাপাশি যোগা করুন। যোগাসন শরীরের পাশাপাশি মনও ভালো রাখে। স্ট্রেস, ডিপ্রেশন কাটিয়ে মন চাঙা রাখুন। মাইণ্ড ফুলনেস থেরাপি খুব ভালো কাজ দেয়।

চিকিৎসা কীভাবে করা হয়?

মেডিসিন তো দেওয়াই হয়। অ্যাসিটাইল কোলিন বাড়তে সাহায্য করে এমন ওষুধ দেওয়া হয়। এর ৩/৪ রকমের প্রকারভেদ রয়েছে। অবস্থা বুঝে এবং পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার কথা বিবেচনা করে চিকিৎসক নির্দিষ্ট ওষুধ ঠিক করেন। ইদানীং কিছু বিশেষ ধরনের প্যাচ পাওয়া যায় যা ত্বকে লাগিয়ে রাখলে প্রয়োজনীয় ওষুধটি মস্তিষ্কে সরবরাহ করা যেতে পারে।

বাড়ির লোক কী করে বুঝবেন যে একটা সমস্যা শুরু হতে চলেছে?

খুব অসংলগ্ন কথা, হঠাৎ রেগে যাওয়া, কথা বলতে গিয়ে একটা শব্দ খুঁজতে গিয়ে খুব ভাবতে হচ্ছে— তখনই বুঝে নিতে হবে একটা সমস্যা হচ্ছে। ব্যাপারটাকে গুরুত্ব দিন, বয়সের ভিমরতি না ভেবে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াটা খুব জরুরি যাতে পরিস্থিতি হাতের বাইরে চলে না যায়। তবে অবসাদ থেকেও ভুলে যাওয়ার একটা ব্যাপার অনেকের ক্ষেত্রে হয়, সেটা ডিমেনশিয়া নয়। এঁরা কথা বলতেই চান না, নিজের মধ্যে গুটিয়ে থাকেন, সেটা কিন্তু অ্যালঝাইমার নয়।

সূত্র: বর্তমান পত্রিকা

সর্বশেষ সংশোধন করা : 2/14/2020



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate