অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

সন্তানের জন্য উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ডেকে আনে নির্যাতন

সন্তানের জন্য উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা ডেকে আনে নির্যাতন

বহু ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে দৈনন্দিন নানা কাজ, নিজের করার কথা, ছেলে বা মেয়ে বাবা-মার মুখাপেক্ষী হয়ে থাকে কোনও কাজই নিজে করতে পারে না। স্কুলের হোম টাস্ক, প্র্যাকটিক্যাল খাতা তৈরি, পড়া তৈরি — এ সব কাজে মা বা বাবার (বেশির ভাগে ক্ষেত্রে মায়ের ) প্রত্যক্ষ সাহায্য ছাড়া বহু স্কুলপড়ুয়াই অসহায় বোধ করে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় খাওয়া, জামাকাপড় পড়া, স্নান করা প্রভৃতি দিন যাপনের জরুরি বিষয়গুলি নিজেও করে উঠতে পারে না অনেকে। সাধারণত মায়ের উপর নির্ভর করে থাকতে দেখা যায় এই বিষয়গুলিতে।

সচরাচর দেখা যায় সন্তানের সব কিছু ঘিরে এত ভাবনা, নিজেকে জড়িয়ে রাখার প্রবণতা যে মায়েদের মধ্যে বেশি তাঁদের উৎকণ্ঠার মাত্রাও স্বাভাবিকের থেকে বেশি। এই সংক্রমণ আজ বেশির ভাগ বাবা-মার মনেই। তাঁদের মধ্যে ছেলেমেয়েদের কাছে ক্রমাগত বেড়েছে চাহিদা, তার সঙ্গে সঙ্গে বেড়েছে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। এই উৎকণ্ঠা থেকে বেড়েছে শিশুদের উপর নির্যাতন, কখনও মানসিক কখনও বা শারীরিক। নির্যাতন বা নিপীড়ন — তা যেমন ধরনেরই হোক তা শিশু মনে গভীর ক্ষতের সৃষ্টি করে। যে ক্ষত প্রতিবন্ধকতা হয়ে দাঁড়ায় তার সুস্থ ব্যক্তিত্বের বিকাশে। দেখা দেয় নানাবিধ মনের সমস্যা (অস্বাভাবিক উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা, ভয়, একেবারে চুপচাপ হয়ে যাওয়া, নিজেকে গুটিয়ে নেওয়া, নিজেকে অপরাধী ভাবা, অসহায় হতাশ হয়ে পড়া — বিষণ্ণতার শিকার হওয়া কিংবা অস্বাভাবিক জেদ, মুখে মুখে তর্ক করা, উদ্ধত দুর্বিনীত আচারণ, আক্রমণত্মক হয়ে ওঠা, অবাধ্য হয়ে ওঠা, নেশাশক্তি প্রভৃতি) নিপীড়িত বহু শিশুর মধ্যেই।

ছেলেমেয়েদের ভালো চান এই বিশ্বাসেই তাঁরা নেতিবাচক সমালোচনা করে থাকেন, কখনও বা অন্যের সঙ্গে তুলনা কিংবা মারধর করে থাকেন। কিন্তু বাস্তবে এ সবের মাধ্যমে নিজেদের অজান্তেই ছেলেমেয়েদের আত্মমর্যাদাকে আহত করেন, তাদের যথার্থ আত্মপ্রতীতি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অন্তরায় হয়ে ওঠেন।

ক্রমাগত সমালোচনা, অন্যের সঙ্গে তুলনা, অবহেলা, শারীরিক নির্যাতনের মূলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই থাকে বাবা-মার অস্বাভাবিক উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, অস্বাভাবিক প্রত্যাশা ও মাত্রাতিরিক্ত উচ্চাকাঙ্ক্ষা।

প্রতি বছর মাধ্যমিক বা উচ্চমাধ্যমিক কিংবা জয়েন্ট এন্ট্রান্সের ফল প্রকাশের পর কিংবা আগেও কমবয়সিদের মধ্যে আত্মহননের খবর আমরা কাগজের পৃষ্ঠায় দেখে থাকি। আত্মহননের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে আমাদের এই রাজ্যে।

আত্মহননের পরিসংখ্যানে আত্মহননের কারণ সে ভাবে উল্লেখ করা সম্ভব নয়। বহু আত্মহত্যার মূলেই থাকে বিষণ্ণতার ভূমিকা। আমরা জানি স্নায়ুপ্রেরক-এর ভারসাম্যের অভাবের সঙ্গে বাইরের কারণের (স্ট্রেসর) মিথষ্ক্রিয়ার ফলে বিষণ্ণতা দেখা দেয়। সব ক্ষেত্রে বাইরের কারণ খুব নির্দিষ্ট ভাবে চিহ্নিত করা যায় তা হয়তো নয়। অনেকটাই অনুমানসাপেক্ষ। কমবয়সিদের সাম্প্রতিক আত্মহত্যার ঘটনাগুলি যদি বিশ্লেষণ করা যায়, তা হলে অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যাবে পড়াশোনার চাপ, পরীক্ষার ফল আশানুরূপ না হাওয়া, চাহিদা পূরণে ব্যর্থতা প্রভৃতি বিষয়গুলি কারণ হিসাবে উঠে এসেছে। এই বিষয়টি সম্পর্কে আমাদের বোধহয় সংবেদনশীল হওয়া জরুরি। আরও জরুরি বাবা-মাদের ক্রমবর্ধমান উদ্বেগ উৎকণ্ঠা সম্পর্কে আত্মসচেতনতা গড়ে তোলা।

সূত্র : পরিকথা ২০০৭

সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/28/2020



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate