প্রতিটি জেলায় শিশু কল্যাণ সমিতি এবং কিশোর ন্যায় বিচার পর্ষদ সঠিকভাবে পরিচালনা করার জন্য সুসংহত শিশু সুরক্ষা প্রকল্পে প্রয়োজনমত আর্থিক বরাদ্দ ও পরিকাঠামোর ব্যবস্থা আছে। কোনো জেলায় যদি শিশু আব বা পর্যবেক্ষণ আবাস না থাকে সেইসব জেলাতে শিশু কল্যাণ সমিতি এবং কিশোর ন্যায় বিচার পর্ষদ কার্য পরিচালনার জন্য অফিস ঘর নির্মাণ করা এবং ভাড়া করার জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ সুসংহত শিশু সুরক্ষা প্রকল্পে বরাদ্দ আছে। কিশোরদের জন্য বিশেষ পুলিশ সেল (SPU) জেলা শিশু সুরক্ষা সোসাইটির অন্তর্ভুক্ত দুই জন সমাজ কর্মীর বেতনের ব্যবস্থাও সুসংহত শিশু সুরক্ষা প্রকল্পে বরাদ্দ আছে।
কশোর বিচারে (শিশুদের যত্ন ও সুরক্ষা) আইন, ২০০৬ অনুযায়ী শিশুর জন্য প্রতিটি জেলায় অন্তত একটি করে শিশু কল্যাণ সমিতি গঠিত হবে, এটি যত্ন ও সুরক্ষার প্রয়োজনে থাকা শিশুদের সঠিক যত্ন, সুরক্ষা, চিকিৎসা, বিকাশ এবং পুনর্বাসন সংক্রান্ত সব বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবে।
কিশোর বিচার (শিশুদের যত্ন ও সুরক্ষা) আইন, ২০০৬ অনুযায়ী প্রতিটি জেলায় অন্তত একটি করে কিশোর বিচার পর্ষদ গঠিত হবে। এটি আইনের সাথে সংঘাতে থাকা কিশোরদের সাথে সম্পর্কিত প্রতিটি বিষয়ের সিদ্ধান্ত নেওয়ার চূড়ান্ত ক্ষমতা কিশোর বিচার পর্ষদের।
যেহেতু পুলিশ শিশুর সাথে সর্বপ্রথম যোগাযোগ স্থাপন করে সেহেতু কিশোর ন্যায় বিচার ব্যবস্থায় পুলিশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। কিশোরদের জন্য বিশেষ সেল তৈরী হয়েছে আইনের সাথে সংঘাতে থাকা কিশোর এবং যত্ন ও সুরক্ষার প্রয়োজনে থাকা শিশু সংক্রান্ত সমস্ত বিষয়গুলি গ্রহণ করার জন্য।
কিশোরদের জন্য বিশেষ পুলিশ কক্ষ তৈরী হয় একজন কিশোর/শিশু কল্যাণ আধিকারিক, যিনি থানার সেকেন্ড অফিসার (অর্থাৎ মেজবাবু) পদের হবেন এবং জেলা শিশু সুরক্ষা কক্ষ থেকে ২ জন পেশাদারী সমাজকর্ম (যাদের মধ্যে একজন অবশ্যই মহিলা) নিয়ে যাদের শিশুদের সাথে ব্যবহার এবং শিশুদের সাথে কাজ করার যথেষ্ট প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতা আছে।
প্রাথমিকভাবে সমাজকর্ম শিশুটিকে নির্ভরতা দেবেন এবং একটি বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশ সৃষ্টি করবেন যাতে শিশুটি কিছুটা আশ্বস্ত হতে পারে এবং শিশুটির থেকে সমস্ত দরকারী তথ্যগুলি জানার চেষ্টা করবেন। সমাজকর্মী বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলির সাথে সংযোগ রক্ষা করবেন যাতে শিশুটি অস্থায়ীভাবে কোনো প্রতিষ্ঠানে থাকতে পারে যতক্ষণ না তাকে, ঘটনানুযায়ী, কিশোর ন্যায় বিচার পর্ষদ বা পর্যবেক্ষণ আবাস অথবা শিশু কল্যাণ সমিতি বা শিশু আবাসে রাখা হচ্ছে বা আইনের সঙ্গে সংঘাতে থাকা কিশোরের জামিন হচ্ছে।
কিশোর/শিশু কল্যাণ আধিকারিক প্রতিটি জেলার কিশোর ন্যায় বিচার পর্ষদ এবং শিশু কল্যাণ সমিতির সাথে সম্পূর্ণ যোগাযোগ রাখবেন। কিশোর/শিশু কল্যাণ আধিকারিকের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাগুলি হলঃ
এই প্রকল্পের বিভিন্ন উপাদান যেগুলি বিশেষত কঠিন পরিবেশে থাকা শিশুদের জন্য তৈরী সেগুলি নিম্নলিখিত চিত্রে দেখানো হল :
রাজ্যে শিশু সুরক্ষা সোসাইটি হল সুসংহত শিশু সুরক্ষা প্রকল্পকে রাজ্যে রূপায়ণ করার জন্য মূল কাঠামো।
শিশু সুরক্ষা প্রকল্প রূপায়ণের জন্য সরকার নীচে উল্লেখ করা কাঠামোগুলিকে স্থাপন করবে:
রাজ্যে সুসংহত শিশু সুরক্ষা প্রকল্পটিকে রূপায়ণ করার জন্য মৌলিক কাঠামো ।
প্রাথমিক স্তরে প্রকল্পটির অন্তর্গত কাজগুলোর পরিকল্পনা করা, নানাবিধ তথ্য সংগ্রহ করা, রিপোট তৈরী করা এবং মূল্যায়ন করার জন্য কাঠামো।
রাজ্যস্তরে প্রকল্পটির ওপর সজাগ দৃষ্টি রাখা এবং রাজ্য শিশু সুরক্ষা সোসাইটির সঙ্গে সংযোগ রাখার জন্য কাঠামো ।
দত্তক গ্রহণের প্রক্রিয়ার জন্য সমন্বয়সাধন করা, সজাগ দৃষ্টি রাখা এবং উন্নয়ন করার জন্য কাঠামো ।
পরিবারভিত্তিক অপ্রাতিষ্ঠানিক যত্নের কর্মসূচীগুলোকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া, রূপায়ণ, তত্ত্বাবধান এবং সজাগ দৃষ্টি রাখার জন্য কাঠামো।
রাজ্য শিশু সোসাইটিকে সুসংহত শিশু সুরক্ষা প্রকল্প এবং শিশু সুরক্ষা সংক্রান্ত প্রকল্পগুলোকে রূপায়িত করার জন্য পশ্চিমবঙ্গ সোসাইটিজ রেজিস্ট্রেশন আইন, ১৯৬১-এ (West Bengal Societies Registration Act XXI, 1961), মোতাবেক নথিভুক্ত করা হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ শিশু বিকাশ দপ্তর এই সোসাইটি তৈরী করার ব্যাপারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন। রাজ্যে ২০১০ সালে ফেব্রুয়ার মাসে রাজ্য শিশু সুরক্ষা সোসাইটি গঠিত হয়েছে এবং সংশ্লিষ্ট আইনে নিবন্ধীকৃত হয়েছে।
সুত্রঃ পশ্চিমবঙ্গ শিশু বিকাশ দফতর
সর্বশেষ সংশোধন করা : 1/28/2020