অসমীয়া   বাংলা   बोड़ो   डोगरी   ગુજરાતી   ಕನ್ನಡ   كأشُر   कोंकणी   संथाली   মনিপুরি   नेपाली   ଓରିୟା   ਪੰਜਾਬੀ   संस्कृत   தமிழ்  తెలుగు   ردو

প্রবীণ নাগরিক সংক্রান্ত জাতীয় নীতি ২০১১

২০১১ - এর প্রবীণ নাগরিক সংক্রান্ত জাতীয় নীতি বা ‘ন্য‌াশানাল পলিসি ফর সিনিয়ার সিটিজেন্স ২০১১’ নামক নতুন নীতিটি বিভিন্ন বিষয়ের উপর ভিত্তি করে তৈরি। এর মধ্য‌ে প্রবীণদের জনসংখ্য‌া বিস্ফোরণের কথা বিবেচনা করা হয়েছে, পরিবর্তিত সামাজিক ও অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কথা বিবেচিত হয়েছে, চিকিৎসা বিজ্ঞানে অগ্রগতির কথা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতির কথা, গ্রামীণ এলাকায় প্রবীণ নাগরিকদের উচ্চহারে ছিন্নমূল হওয়ার বিষয় ( প্রায় ৫ কোটি ১০ লক্ষ প্রবীণ নাগরিক দারিদ্রসীমার নীচে বাস করেন ) বিবেচিত হয়েছে। প্রবীণ পুরুষদের তুলনায় মহিলারা অনেক বেশি সংখ্য‌ায় একাকিত্বের শিকার। তারা বেশির ভাগ ক্ষেত্রে ছেলেমেয়েদের উপর নির্ভরশীল। সামাজিক বঞ্চনা ও বিচ্ছিন্নতা, চিকিৎসা পরিষেবার ক্রমাগত বেসরকারিকরণ এবং মৃত্য‌ুর চরিত্র পরিবর্তন প্রবীণদের উপর প্রভাব ফেলছে। ৬০ বছরের ঊর্ধ্বে সমস্ত মানুষ প্রবীণ নাগরিক। এই নীতি শহর ও গ্রামাঞ্চলে বসবাসরত প্রত্য‌েক প্রবীণ নাগরিকের সম্পর্কিত বিষয়গুলিকে তুলে ধরেছে। বিশেষ করে বৃদ্ধা এবং অতিবৃদ্ধ - বৃদ্ধাদের কথা চিন্তা করে এই নীতি তৈরি করা হয়েছে।

নীতিগত ভাবে এই নীতি সমস্ত বয়সের নাগরিকদের নিয়ে একটি সুসংবদ্ধ সমাজ গঠনের কথা বলে। এর লক্ষ্য‌ হল এক প্রজন্মের সঙ্গে অন্য‌ প্রজন্মের সেতু বন্ধন, যুবক ও বৃদ্ধদের মধ্য‌ে সংযোগ স্থাপন এর লক্ষ্য‌ হল এক প্রজন্মের সঙ্গে অন্য‌ প্রজন্মের সেতু বন্ধন, যুবক ও বৃদ্ধদের মধ্য‌ে সংযোগ স্থাপন ও বিভিন্ন বয়সের মানুষদের মধ্য‌ে নিবিড় বন্ধন গড়ে তোলা। একটি প্রথাগত ও অপ্রথাগত সামাজিক সহায়তা পদ্ধতি গড়ে তোলাতে এই নীতি বিশ্বাস করে যাতে প্রবীণদের ব্য‌াপারে যত্নবান হতে পরিবারগুলির ক্ষমতা বাড়ে এবং প্রবীণরা পরিবারেই বসবাস করতে পারেন। যে সব প্রবীণ নাগরিক যাঁরা পারিবারিক বন্ধন এবং প্রজন্মগত বোঝাপড়া ও সমর্থনের উপর নির্ভরশীল, তাঁদের কাছে, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের সেই সব অসংখ্য‌ প্রবীণ মানুষের কাছে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়াই এই নীতির লক্ষ্য।

উৎস : পোর্টাল কন্টেন্ট দল

নতুন নীতির মূল কথা

  • প্রবীণ নাগরিকদের, বিশেষ করে বৃদ্ধাদের সমাজের মূল স্রোতে রাখা এবং তাঁদের ব্যাপারে ইতিমধ্যেই নাগরিক সমাজ ও প্রবীণ নাগরিক সংগঠনের সমর্থনপুষ্ট যে সব সরকারি ব্যবস্থা আছে তা রূপায়ণে অগ্রাধিকার দিয়ে তাঁদের সম্পর্কিত বিষয়গুলোকে জাতীয় উন্নয়ন সংক্রান্ত বিতর্কে সামিল করা। এ ধরনের কাজ এবং প্রবীণ নাগরিকদের সংগঠন (বিশেষ করে মহিলাদের) গড়ে তোলার কাজে সমর্থন দেওয়া।
  • নিজের জায়গায় বা নিজের বাসস্থানেই প্রবীণ নাগরিকদের জীবন কাটানো সম্পর্কিত ধারণা তুলে ধরা, আবাসন, আয় সংক্রান্ত নিরাপত্তা, বাড়িতে যত্ন নেওয়া ও বার্ধক্য পেনশনের ব্যবস্থা করা, স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিমা প্রকল্পের সুযোগ যাতে প্রবীণরা নিতে পারেন তার ব্যবস্থা করা এবং বৃদ্ধ বয়সে সম্মান নিয়ে বাঁচার জন্য‌ প্রযোজনীয় প্রকল্প ও কর্মসূচি গ্রহণ। নিরাময়ের চেয়ে প্রতিরোধেই জোর দেওয়া হয়েছে এই নীতিতে।
  • প্রবীণ নাগরিকদের প্রাতিষ্ঠানিক যত্ন প্রদান শেষ উপায় হিসাবে মনে করে এই নীতি। এই নীতি মনে করে, বৃদ্ধদের যত্নের বিষয়টি পরিবারেই ন্য‌স্ত থাকা উচিত, এবং সেই কাজে অংশীদার হবে সামাজিক গোষ্ঠী, সরকার ও বেসরকারি ক্ষেত্র।
  • মাদ্রিদ পরিকল্পনা (মাদ্রিদ প্ল্যান অফ অ্যাকশন) ও বাধামুক্ত কাঠামোর (ব্যারিয়ার ফ্রি ফ্রেমওয়ার্ক) স্বাক্ষরকারী হিসাবে এই নীতির লক্ষ্য সার্বিক বাধামুক্ত এবং বয়স্ক-বান্ধব সমাজ গড়ে তোলা।
  • প্রবীণ নাগরিকরা দেশের উল্লেখযোগ্য‌ সম্পদ, এই ধারনাকে স্বীকৃতি দেওয়া এবং এমন একটা পরিবেশ তৈরি করা যাতে তাঁরা সমান সুযোগ পান, তাঁদের অধিকার সুরক্ষিত হয় ও সমাজে তাঁদের পূর্ণ অংশগ্রহণ সুনিশ্চিত হয়। এই লক্ষ্য পূরণের পথে রাজ্যগুলো শহর ও গ্রামাঞ্চলে দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী প্রবীণ নাগরিকদের দিকে সাহায্য‌ের হাত বাড়িয়ে দেবে এবং তাঁদের সামাজিক নিরাপত্তা, শারীরিক যত্ন, আশ্রয় ও কল্য‌াণের ব্য‌াপারটি সুনিশ্চিত করবে বলে এই নীতির ধারণা। যাতে প্রবীণ নাগরিকদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন ঘটে তার জন্য এই নীতি তাঁদের শোষণ এবং দুর্ব্য‌বহারের হাত থেকে বাঁচাবে।
  • শহর ও গ্রামাঞ্চলে সঞ্চয় ও ঋণের দীঘর্মেয়াদি পরিকল্পনাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। গ্রাহকরা যাতে মেয়াদের শেষে ঠিকমতো টাকা পান সেটি সুনিশ্চিত করতে হবে। তাঁদের ক্রয়ক্ষমতা হ্রাসের বিষয়টি মাথায় রেখে প্রকল্পগুলিকে আকর্ষণীয় করতে হবে।
  • অবসর নেওয়ার পর আয়ভিত্তিক কাজ করার ব্যাপারে প্রবীণ নাগরিকদের উৎসাহ দিতে হবে।
  • যে সব সংগঠন প্রবীণ নাগরিকদের জন্য কাউন্সেলিং, কেরিয়ার গাইডেন্স ও প্রশিক্ষণের ব্য‌বস্থা করে তাদের সমর্থন ও সাহায্য‌ করা।
  • রাজ্য‌গুলিকে মেইনটেনেন্স অফ পেরেন্টস অ্য‌ান্ড সিনিয়ার সিটিজেন্স অ্য‌াক্ট ২০০৭ কার্যকর করা ও ট্রাইবুনাল গঠনের ব্য‌াপারে উপদেশ দেওয়া যাতে প্রবীণ বাবা-মা যাঁরা নিজেদের দেখভাল করতে অক্ষম তাঁরা কখনও নিজেদের পরিত্য‌ক্ত এবং বঞ্চিত না ভাবেন।
  • রাজ্য‌গুলি পরিত্য‌ক্ত প্রবীণ নাগরিকদের জন্য‌ দেশের প্রতিটি জেলায় হোম তৈরি করবে এবং তাঁদের বাঁচতে সাহায্য‌ করবে। বাজেটে এ ব্য‌াপারে যথাসম্ভব অর্থ বরাদ্দ করা হবে।

যেখানে হস্তক্ষেপ প্রয়োজন

আইনের ‘রূপায়ণ’ শাখায় কেন্দ্রীয় ও রাজ্য‌ পর্যায়ের যে সব মন্ত্রকের কথা বলা হয়েছে তারা এই নীতি কার্কর করবে এবং প্রবীণদের নাগরিকদের জন্য নিম্নলিখিত পদক্ষেপ নেবে।

বৃদ্ধ বয়সে আর্থিক নিরাপত্তা

প্রবীণ বয়সে যে বিষয়টিতে সব চেয়ে বড় হস্তক্ষেপ প্রয়োজন তা হল আয়ের রাস্তা। বেশির ভাগ প্রবীণ মানুষ আর্থিক নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। এটা মনে রাখা দরকার, প্রবীণ ব্য‌ক্তিদের দুই তৃতীয়াংশই দারিদ্রসীমার নীচে বসবাস করেন। গোটা দেশ জুড়েই বয়স যত বাড়বে এই সংখ্যাও তত বাড়তে থাকবে।

ইন্দিরা গান্ধী ন্য‌াশনাল ওল্ডএজ পেনশন স্কিম

  • দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী সমস্ত প্রবীণ ব্য‌ক্তি এই পেনশন প্রকল্পের অন্তর্ভুক্ত হবেন।
  • পেনশনের হার বাড়িয়ে প্রতি মাসে ব্য‌ক্তি পিছু এক হাজার টাকা করা হয়েছে এবং মুদ্রাস্ফীতির প্রকোপে জিনিসপত্রের দাম বেড়ে যাওয়ার দরুন মাঝেমাঝে এই হার সংশোধন করা হয়।
  • ইন্দিরা গান্ধী ন্য‌াশনাল ওল্ডএজ পেনশন স্কিমের (আইজিএনওপিএস) আওতায় অতি বৃদ্ধরাও পড়বেন। প্রতিবন্ধকতা থাকলে,পরিণত বয়সের সন্তান মারা গেলে এবং মহিলা ও নাতি-নাতনিদের প্রতি দায়বদ্ধতা থাকলে তাঁদের অতিরিক্ত পেনশন দেওয়া হবে। প্রতি পাঁচ বছর অন্তর এটি পর্যালোচনা করা হবে।

গণ বন্টন ব্য‌বস্থা

  • দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী সমস্ত প্রবীণ নাগরিকদের গণ বন্টন ব্য‌বস্থার আওতায় নিয়ে আসা হবে।

আয়কর

  • চিকিৎসার খরচ, নার্সিংয়ের খরচ, যাতায়াতের খরচ এবং বাড়িতে সহায়তা নেওয়ার খরচ অনেক বেড়ে যাওয়ায় প্রবীণ নাগরিকদের আর্থিক সমস্য‌া বেড়ে গিয়েছে। তাই কর ব্য‌বস্থা প্রবীণ নাগরিকদের আর্থিক সমস্য‌ার প্রতি সহানুভূতিশীল হবে।

ক্ষুদ্রঋণ

  • প্রবীণ নাগরিকদরে কম সুদের হারে ঋণ দেওয়া হবে যাতে তাঁরা ছোট ব্য‌বসা শুরু করতে পারেন। রিজার্ভ ব্য‌াঙ্ক অফ ইন্ডিয়ার গাইডলাইন অনুসারে প্রবীণ নাগরিকদের জন্য ক্ষুদ্রঋণের ব্য‌বস্থা করা হবে।

স্বাস্থ্যের দিকে নজর

বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে প্রবীণ নাগরিকদের স্বাস্থ্য‌ এবং তৎসংক্রান্ত সমস্য‌ার মুখোমুখি হতে হয়। কারও কারও ক্ষেত্রে এই অসুস্থতা দীর্ঘমেয়াদি হয়, কারও কারও অসুস্থতা বহুমুখী হয়, এমনকী প্রতিবন্ধী হয়ে চলাফেরার ক্ষমতা হারানোর ঝুঁকিও রয়েছে। সেই কারণে তাঁদের উপর সর্বদা নজর রাখা প্রয়োজন। কিছু কিছু স্বাস্থ্য‌ সংক্রান্ত অসুবিধা বিশেষ করে কাজের ক্ষমতা হারিয়ে ফেলার মতো ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি চিকিৎসা ও শুশ্রূষার ব্য‌বস্থা করতে হয়।

  • প্রবীণ নাগরিকদের স্বাস্থ্যের দিকে নজর দেওয়ার ব্যাপারটিতে সব চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হবে। এর লক্ষ্য‌ সাধ্য‌মতো ভালো স্বাস্থ্য‌ পরিষেবার ব্য‌বস্থা করা, গরিবদের জন্য‌ উচ্চ হারে ভর্তুকির ব্য‌বস্থা এবং সাধ্য‌ের নিরিখে ধাপে ধাপে খরচ নির্ধারণ করা। সরকারি স্বাস্থ্য‌ ব্য‌বস্থা, স্বাস্থ্য‌বিমা ব্য‌বস্থা, মুনাফা বর্জিত সংস্থাগুলি প্রদত্ত পরিষেবা (যার মধ্য‌ে ট্রাস্ট ও দাতব্য‌ প্রতিষ্ঠান রয়েছে)ও বেসরকারি স্বাস্থ্য‌পরিষেবার মধ্য‌ে উপযুক্ত সংমিশ্রণ ঘটিয়ে এই ব্যবস্থা করতে হবে। সরকারি স্বাস্থ্য‌ পরিষেবা ব্য‌বস্থা পুরোপুরি রাজ্য‌ের হাতে, মুনাফা বর্জিত সংস্থাগুলিকে সাহায্য‌ করা, ছাড় দেওয়া প্রয়োজন এবং বেসরকারি স্বাস্থ্য‌ পরিষেবাকে নিয়ন্ত্রণের মধ্য‌ে রেখে উৎসাহিত করা দরকার। খুব ভালো হয় যদি বেসরকারি স্বাস্থ্য‌ পরিষেবা যারা দেয় তাদের নিয়ে একটি অ্য‌াসোসিয়েশন গঠন করা যায়।
  • সরকারি স্বাস্থ্য‌ পরিষেবার মূল ভিত্তি হবে প্রাথমিক স্বাস্থ্য‌ পরিষেবা। প্রবীণ নাগরিকদের কাজে লাগে এমন ভাবে এই পরিষেবাকে শক্তিশালী করতে হবে। প্রতিরোধ, নিরাময়, স্বাস্থ্য পুনরুদ্ধার এবং পুনর্বাসনের পরিষেবাকে বিস্তৃত এবং শক্তিশালী করা দরকার এবং পরিষেবার দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্তরে বয়স্কদের জন্য‌ বিশেষ ব্য‌বস্থা করতে হবে। এর জন্য‌ সরকারি ক্ষেত্রে আরও বেশ অর্থ বরাদ্দ করতে হবে, গ্রাম ও শহরাঞ্চলে পরিষেবা ঠিকমতো ছড়িয়ে দিতে হবে এবং আরও সুদৃঢ় প্রশাসনিক ও বণ্টন ব্য‌বস্থা গড়তে হবে। ষাটোর্ধ্ব সকলের জন্য‌ রোগ প্রতিরোধ, চিকিৎসা ও পুনর্বাসন এই তিন ক্ষেত্রে পরিষেবার ব্যবস্থা করা হবে। এই নীতি জাতীয় পর্যায়ে বিভিন্ন স্তরে বিভক্ত বার্ধক্য স্বাস্থ্য‌ পরিষেবা গঠনের উপর জোর দিচ্ছে, যার মধ্যে রয়েছে বহির্বিভাগের রোগীদের জন্য‌ ডে কেয়ার, রোগের সাময়িক উপশমে স্বাস্থ্য পরীক্ষা, পুনর্বাসনের ব্যবস্থা ইত্যাদি।
  • সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের নার্স বা ‘আশা’র (এএসএইচএ) নার্স বছরে দু’বার গ্রাম ও শহরে ৮০ বছরের উপর বয়স্কদের বিশেষ পরীক্ষা করবে। গ্রামাঞ্চলে সরকারি/বেসরকারি উদ্য‌োগে বিশেষ সমীক্ষার মাধ্যমে বার্ধক্য স্বাস্থ্য পরিষেবা ও রোগের সাময়িক উপশমে স্বাস্থ্য‌ পরিষেবার হাল কেমন সে সম্পর্কে ধারণা সম্ভব হবে এবং গ্রামাঞ্চলে অসংক্রমণযোগ্য‌ রোগ (নন কমিউনেকেবল ডিজিজ—এনসিডি) বৃদ্ধি সম্পর্কে তথ্য‌ সংগ্রহ করা যাবে।
  • বৃদ্ধ বয়সে প্রাথমিক যত্নের ব্যাপারে পরিবারের ভূমিকা রয়েছে। তাই দেশ জুড়ে পরিবার ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। এর জন্য‌ নবীন প্রজন্মকে সংবেদনশীল করে তোলা হবে। এবং যাঁরা পরিবারের বয়স্কদের যত্ন নেন তাঁদের কর ছাড়ের ব্য‌বস্থা করা হবে।
  • বিভিন্ন আয়ের মানুষদের প্রয়োজন অনুযায়ী হেলথ কেয়ার বিমা ব্য‌বস্থাকে উন্নত করার ব্যাপারে অগ্রাধিকার দেওয়া হবে। বিভিন্ন স্তরের প্রিমিয়ামের জন্য বিভিন্ন ধরনের সুবিধা পাওয়ার ব্যবস্থা এতে থাকবে। একেবারে নিম্ন আর্থিক ক্ষমতা সম্পন্ন মানুষদের উপযোগী প্যাকেজের জন্য রাষ্ট্রীয় ভর্তুকির সুযোগ থাকবে। স্বাস্থ্য‌ বিমার আওতায় আরও বেশি লোককে আনতে ছাড়ের ব্যবস্থা থাকবে। সমস্ত জেলায় রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনাকে সক্রিয় করা হবে এবং প্রবীণ নাগরিকদের এর আওতায় আনা হবে। প্রবীণ নাগরিকদের স্বাস্থ্য‌বিমার জন্য‌ বিশেষ পলিসির ব্য‌বস্থা করা হবে।
  • সরকারের তৈরি স্বাস্থ্য তহবিলে কম বয়স থেকে টাকা জমানোর ব্য‌াপারে নাগরিকদের উৎসাহ দেওয়া হবে যাতে অবসর নেওয়ার পর চিকিৎসার ক্রমবর্ধিত খরচ মেটাতে অসুবিধা না হয়। উচ্চবর্গীয় ব্য‌ক্তিদের জন্য‌ এই তহবিল থেকেই স্বাস্থ্য‌ পরিষেবা বিমার প্রিমিয়াম দেওয়ার ব্য‌বস্থা থাকবে।
  • মানসিক স্বাস্থ্য‌ের ব্য‌াপারে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য‌ বিশেষ কর্মসূচি নেওয়া হবে বিশেষ করে আলঝাইমার বা ডিমেনশিয়া যাতে গোড়ায় ধরা পড়ে এবং এই রোগের ব্য‌াপারে যাতে যথেষ্ট যত্নবান হওয়া যায় সে ব্য‌াপারে উদ্য‌োগ নেওয়া হবে।
  • ন্য‌াশানাল প্রোগ্রাম ফর কন্ট্রোল অফ ব্লাইন্ডনেসের (এনপিসিবি) অন্য‌তম কাজই হল বয়স্ক মানুষদের দৃষ্টি ও দৃশ্য‌মানতা ফিরিয়ে দেওয়া।
  • প্রবীণদের ভালো থাকা এবং নিরাপত্তার জন্য‌ ওয়েবভিত্তিক পরিষেবার মতো বিজ্ঞান ও কারিগরি ব্য‌বস্থার ব্য‌বহারকে উৎসাহিত করা হবে এবং যে জায়গায় পরিষেবার অভাব রয়েছে সেখানে বিস্তৃত করা হবে।
  • বৃদ্ধদের স্বাস্থ্য পরিষেবার প্রয়োজনে দেশে জাতীয় ও আঞ্চলিক সংস্থা গঠন করা হবে। এই ধরনের সংস্থা যাতে ভালো ভাবে কাজ করতে পারে তার জন্য‌ বাজেটে যথেষ্ট অর্থ বরাদ্দের ব্য‌বস্থা করা হবে এবং পেশাদার সেবকদের মধ্য‌ থেকে বয়স্ক মানুষের সেবার জন্য‌ বার্ধক্য স্বাস্থ্যে বিশেষজ্ঞ বাহিনী গড়া হবে।
  • বয়স্কদের স্বাস্থ্য দেখভাল করার জন্য‌ বর্তমানে যে জাতীয় কর্মসূচি (ন্য‌াশনাল প্রোগ্রাম ফর হেলথ কেয়ার অফ দি এলডারলি বা এনপিএইচসিই) চালু আছে তা অবিলম্বে প্রসারিত করা হবে এবং নাগরিক সমাজের সংগঠনগুলির সহায়তায় তা দেশের সমস্ত জেলায় ছড়িয়ে দেওয়ার ব্য‌বস্থা করা হবে।
  • বয়স্কদের স্বাস্থ্য‌ পরিষেবার জন্য‌ যেখানে সম্ভব সেখানে সরকারি ও বেসরকারি অংশীদারি মডেল প্রয়োগ করা হবে।
  • সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রের মাধ্য‌মে চলমান স্বাস্থ্য‌ পরিষেবার ব্য‌বস্থা করা হবে এবং যে সব স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এই ধরনের পরিষেবা দেবে তাদের ভর্তুকি দিয়ে সাহায্য‌ করা হবে।
  • সরকারি তহবিল সমৃদ্ধ প্রকল্পের মাধ্য‌মে সব বয়স্কদের স্বাস্থ্য‌ বিমার আওতায় আনা হবে। বিশেষ করে যাঁদের বয়স ৮০ অতিক্রম করেছে ও আয়কর দেন না এমন মানুষদের জন্য‌ বিশেষ প্রকল্প করতে হবে।
  • মৃত্য‌ুপথযাত্রী রোগীদের জন্য‌ রুগ্নশালা এবং রোগের সাময়িক উপশমের ব্য‌বস্থা করা হবে। সমস্ত জেলা হাসপাতালে এই পরিষেবা দিতে হবে। রোগের সাময়িক উপশমের ব্য‌বস্থার ব্য‌াপারে ভারতের যে নীতি রয়েছে সে সম্পর্কে সমস্ত ডাক্তার ও চিকিৎসা সংক্রান্ত পেশাদারদের অবহিত করা হবে।
  • স্বাস্থ্য‌র ক্ষেত্রে লিঙ্গভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গির মান্য‌তা দেওয়া হবে এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য‌ পরীক্ষার ব্য‌বস্থা করতে হবে। বিশেষ করে বয়স্ক মহিলা, যাঁরা নিজেদের সমস্য‌া গোপন করে রাখেন তাঁদের ক্ষেত্রে এই ব্য‌বস্থা করতে হবে।

নিরাপত্তা ও সুরক্ষা

বয়স্কদের সঙ্গে দুর্ব্য‌বহার করলে কড়া শাস্তির ব্যবস্থা রয়েছে।

  • বয়স্কদের সঙ্গে দুর্ব্য‌বহার করা এবং প্রবীণ ব্য‌ক্তিদের, বিশেষ করে যাঁরা বিধবা বা একা থাকেন বা যাঁরা প্রতিবন্ধী তাঁদের বিরুদ্ধে করা অপরাধকে গোষ্ঠী সচেতনতা এবং নজরদারির মাধ্য‌মে আটকাতে হবে।
  • একা থাকা প্রবীণ ব্য‌ক্তি বা বয়স্ক দম্পতিকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য‌ পুলিশকে একটি সুসংহত পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে এবং তারা বন্ধুত্বের দৃষ্টিকোণ থেকে সে ব্য‌াপারে নজরদারি চালাবে। প্রতিবেশী সংগঠনগুলির সঙ্গে প্রবীণ ব্য‌ক্তিদের নিয়মিত সংযোগ বজায় রাখার ব্য‌বস্থা করবে পুলিশ এবং এর জন্য শহর ও গ্রামাঞ্চলে বিশেষ কর্মসূচির ব্যবস্থা করা হবে।
  • নিরাপত্তামূলক পরিষেবা তৈরি করা হবে এবং লিগাল এইড, হেল্প লাইনের মতো পরিষেবার সঙ্গে সংযোগ স্থাপনের ব্য‌বস্থা করা হবে।

প্রবীণদের আবাসন

আশ্রয় মানুষের অন্য‌তম মূল চাহিদা। বিভিন্ন আয়ের ব্য‌ক্তিদের জন্য‌ আবাসনের সংখ্য‌া বাড়ানোর ব্য‌াপারে নজর দেওয়া হবে। শহর ও গ্রামাঞ্চলে নিম্ন আয়ের মানুষদের জন্য‌ বানানো আবাসনগুলির দশ শতাংশ প্রবীণদের জন্য‌ সংরক্ষিত রাখা হবে। এর মধ্য‌ে ইন্দিরা আবাস যোজনা-সহ অন্য‌ান্য‌ সরকারি প্রকল্পও থাকবে।

  • বাস ও বাস স্টেশন, রেল ও রেল স্টেশন, বিমানবন্দর ও বিমানবন্দরের বাস পরিষেবা, ব্য‌াঙ্ক, হাসপাতাল, পার্ক, প্রার্থনা স্থল, সিনেমা হল, শপিং মল এবং সরকারি জায়গা যেখানে প্রায়শই বয়স্কদের যেতে হয় সেখানে যাতে তাঁরা সহজেই যেতে পারেন তার জন্য অনুকূল, বাধা-মুক্ত ব্য‌বস্থা করা হবে।
  • একাকী বৃদ্ধ বা বৃদ্ধার জন্য‌ আবাসনের ব্য‌বস্থা করা হবে। যাঁদের বিশেষ যত্নের প্রয়োজন রয়েছে তাঁদের জন্য‌ও শহরে বা গ্রামে এই ব্য‌বস্থা করা হবে।
  • ব্য‌ুরো অফ ইন্ডিয়ান স্ট্য‌ান্ডার্ডসের মাধ্য‌মে বয়স্কদের অনুকূল সুবিধাযুক্ত সাধারণ নকশা ও মানের প্রচার করা হবে।
  • যে হেতু প্রবীণ নাগরিকদের সামাজিক মেলামেশার জন্য‌ বহুমুখী কেন্দ্র আবশ্য‌ক তাই আবাসন কলোনিগুলিতে এ ধরনের জায়গা তৈরির জন্য‌ প্রয়োজনীয় স্থান বরাদ্দ করতে হবে। হাউজিং কলোনির মধ্য‌ে প্রবীণদের আলাদা করে রাখা বরদাস্ত করা হবে না বরং গোষ্ঠীর মধ্যে তাঁদের যোগদানে মদত দেওয়া হবে।

উৎপাদনক্ষমতা ও কল্যাণ

উৎপাদনক্ষমতা

  • প্রবীণরা যাতে কাজ চালিয়ে যেতে পারেন এবং/অথবা অবসর নেওয়ার পরেও যাতে তাঁদের কাজের সুযোগ মেলে তার জন্য উপায় উদ্ভাবন করতে এই নীতি ব্য‌বস্থা করার কথা বলবে।
  • কর্মসংস্থান অধিকরণ খোলা হবে যাতে প্রবীণদের পুনর্নিয়োগের ব্য‌বস্থা করা যায়।
  • মানুষের আয়ুষ্কাল ফলে মন্ত্রক অবসরের বয়স পর্যালোচনা করে দেখবে।

কল্য‌াণ

  • প্রবীণ নাগরিকদের জন্য‌ সরকার একটি কল্য‌াণ তহবিল গঠন করবে এবং এর জন্য‌ রাজস্ব আসবে সামাজিক নিরাপত্তা সেসের মাধ্য‌মে। প্রবীণ মানুষদের জনসংখ্য‌া অনুযায়ী এই তহবিল রাজ্য‌গুলির মধ্য‌ে ভাগ করে দেওয়া হবে। রাজ্য‌গুলি নিজেরাও এ ধরনের তহবিল তৈরি করতে পারে।
  • স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলির অপ্রাতিষ্ঠানিক পরিষেবাকে তুলে ধরা ও সাহায্য‌ করা হবে যাতে প্রবীণদের সক্ষমতা বাড়ে এবং তাঁদের পরিবার বয়স্কদের সমস্য‌াকে সঠিক ভাবে সামলাতে পারে।
  • বিধবা, একক নারী এবং প্রবীণতম-সহ সমস্ত প্রবীণ নাগরিক সমস্ত সরকারি প্রকল্পের জন্য উপযুক্ত। তাঁদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে আধার প্রকল্পের মাধ্যমে সর্বজনীন পরিচয়পত্র দেওয়া হবে।
  • গ্রাম ও শহরাঞ্চলে দারিদ্রসীমার নীচে বসবাসকারী প্রবীণ নাগরিকদের বিশেষ চাহিদার কথা মাথায় রেখে বাজেটে বেশি অর্থের সংস্থান করা হবে।

সুত্রঃ পোর্টাল কনটেন্ট টিম

সর্বশেষ সংশোধন করা : 8/22/2019



© C–DAC.All content appearing on the vikaspedia portal is through collaborative effort of vikaspedia and its partners.We encourage you to use and share the content in a respectful and fair manner. Please leave all source links intact and adhere to applicable copyright and intellectual property guidelines and laws.
English to Hindi Transliterate