উ : নিজে প্রশিক্ষণ ও উদ্যোগ নিয়ে মাছের প্রণোদিত প্রজনন ঘটিয়ে ডিম পোনা তৈরি করে, ডিম পোনার চাষ করে চারা পোনা তৈরি করা যায়। আবার ডিম পোনা কিনে আঁতুড় পুকুরে ডিম পোনার চাষ করে চারা পোনা তৈরি করা যায়।
উ : মাছের ডিম নিষিক্ত হওয়ার ১৪ – ১৮ ঘণ্টা পরে ডিম ফুটে খুব সরু সুতার মতো পোনা বেরিয়ে আসে। এদের ডিম পোনা বলা হয়।
উ : যে পুকুরে ডিম পোনার চাষ করা হয় তাকেই আঁতুড় পুকুর বলে। আঁতুড় পুকুর আয়তনে ৫ কাঠা থেকে ১৫ কাঠা পর্যন্ত হয়। জলের গভীরতা ৩ ফুট থেকে ৫ ফুট পর্যন্ত হওয়া দরকার। পাঁক থাকা উচিত নয়। যে পুকুর গরমে শুকিয়ে যায় সেই পুকুরই ডিম পোনার চাষের জন্য আদর্শ। পুকুরের চারপাশে গাছপালা না থাকাই ভাল।
উ : শিকারি ও অন্যান্য মাছ ডিম পোনা খেয়ে ফেলে। তাই সেগুলি মেরে ফেলার জন্য প্রতি কাঠা জলায় প্রতি তিন ফুট গভীরতার জলের জন্য ১৫ কিলো গ্রাম মহুয়া খইল দিতে হবে। পুকুরে মহুয়া খইল প্রথমে বিষক্রিয়ার পর সারে পরিণত হয়।
মহুয়া খইল দেওয়ার ৭ থেকে ১০ দিন পর কাঠা প্রতি জলায় ২ কিলো গ্রাম কলিচুন ছড়াতে হবে।
পুকুরে খাদ্যকণা জন্মানোর জন্য চুন দেওয়ার ৭ থেকে ১০ দিন পর কাঠা প্রতি ৫০ থেকে ৬০ কিলোগ্রাম গোবর সার দেওয়া দরকার। মহুয়া খইল, চুন ও গোবর সার পরিমাণ মতো নির্দিষ্ট সময়ে দিলে পুকুরে ২০ থেকে ২৫ দিন পর প্রচুর পরিমাণে খাদ্যকণা জন্মাবে। জলের রঙ হবে কালচে বাদামি।
প্রাকৃতিক ভাবে পুকুরে কিছু শত্রু পোকা যেমন হাঁস পোকা, তাঁত পোকা জন্মায়। এরা জলে থাকে এবং ডিম পোনা নষ্ট করে। এদের মেরে ফেলা দরকার। ডিম পোনা ছাড়ার ১২ থেকে ২৪ ঘণ্টা আগে কাঠা প্রতি দেড় থেকে দুই লিটার কেরোসিন তেল জলের উপর ছড়িয়ে দিলে সমস্ত পোকা মরে যায়। কিন্তু বৃষ্টির সময় বা ঝড়ো হাওয়া বইবার সময় কেরোসিন দিলে কাজ হবে না।
উ : ডিম পোনা চাষে কাঠা প্রতি পুকুরে ২০ থেকে ২৫ হাজার ডিমপোনা ছাড়তে হয়।
উ : ডিম পোনার সঠিক ভাবে বেড়ে ওঠার জন্য ডিম পোনা ছাড়ার পর দিন থেকে পরিপূরক খাবার দরকার। গুঁড়ো সরষের খইল ও চালের কুঁড়ো সম পরিমাণে মিশিয়ে রোজ সকালে পুকুরে ছড়িয়ে দিতে হবে। কাঠা প্রতি প্রথম পাঁচ দিন প্রতি দিন ৭৫ থেকে ১০০ গ্রাম হিসাবে, দ্বিতীয় পাঁচ দিন প্রতি দিন ১৫০ থেকে ২০০ গ্রাম হিসাবে এবং তৃতীয় পাঁচ দিন প্রতি দিন ২৫০ থেকে ৩০০ গ্রাম হিসাবে খাবার দিতে হবে।
উ : আঁতুড় পুকুরে ডিম পোনা ছাড়ার ১৫ থেকে ১৮ দিন পর ডিম পোনা ধানি পোনায় পরিণত হয়। কাঠা প্রতি প্রায় ২০,০০০ ধানি পোনার উত্পাদন হয়। এই চাষে কাঠা প্রতি খরচ হয় ২২০ টাকার মতো, বিক্রয় হয় ১৫০০ টাকার মতো এবং লাভ হয় প্রায় ১২৮০ টাকার মতো।
উ : নদীতে ডিম পোনা পাওয়া যায়। কিন্তু তাতে পোনা মাছ ছাড়া অন্য মাছের ডিম পোনা মিশে থাকে। হ্যাচারির ডিম পোনায় সে সম্ভাবনা থাকে না। সুতরাং হ্যাচারি থেকে ডিম পোনা নেওয়াই ভালো। পশ্চিমবঙ্গের সমস্ত জেলাতেই একাধিক হ্যাচারি আছে।
উ : মাছ চাষের জন্য পুকুরকে তৈরি করার জন্য চুন ব্যবহার করলে পুকুরের জলের অম্লত্ব কমে আসে, পুকুরের যাবতীয় দূষিত গ্যাস নষ্ট হয়, মাছের উত্পাদন বাড়ে, মাছকে সুস্থ ও সবল রাখা যায়।
উ : মহুয়া খইলে বিষ আছে সেই বিষ মাছ খেকো রাক্ষুষে মাছগুলিকে মারতে সাহায্য করে। পরে এই মহুয়া খইল আবার সারের কাজ করে। এই দুই উপকারে পুকুরে মহুয়া খইল দেওয়া হয়।
উ : মহুয়া খইল ব্যবহার করার ২১ দিন পর পুকুরের জল মাছ ছাড়ার জন্য উপযুক্ত হয়।
সর্বশেষ সংশোধন করা : 6/8/2020
দেশি ও বিদেশি মাছের প্রণোদিত প্রজনন চাষ নিয়ে যে সব...
জিওল মাছ চাষ নিয়ে যে সব প্রশ্ন প্রায়শই করা হয়ে থাক...
জিওল মাছ চাষ নিয়ে যে সব প্রশ্ন প্রায়শই করা হয়ে থাক...
ডিম পোনার চাষ নিয়ে যে সব প্রশ্ন প্রায়শই করা হয়ে থ...